বুধবার কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তহিদুল ইসলামের আদালতে কলেজশিক্ষক রাজিবুল আলমের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় একমাত্র নারী ডেলিভারি ম্যান রজনীর ‘আত্মহত্যা’
এদিকে একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে। মামলার বাদী ঈশ্বরদী থানার রূপপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিন পিন্টু।
এ মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী জানান, একই ঘটনায় জড়িত একই ব্যক্তি এবং একই এজাহারে দুই থানায় জিআর মামলা রেকর্ডভুক্তি বা চালানোর আইনগত কোনো বিধান নেই। এই মামলাটি যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত হয়েছে সেই ঘটনায় অভিন্ন এজাহার আমলে নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঈশ্বরদী থানায় একটি জিআর মামলা রেকর্ডভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:২৭ ঘণ্টা পর কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী-ফরিদপুর রুটে ট্রেন চলাচল সচল
তিনি আরও জানান, এসব তথ্য উপস্থাপন করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় করা মামলাটি চালু রাখার স্বপক্ষে আইনগত কোনো সমর্থন নেই বলে বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করা হয়েছে।
অপর আইনজীবী অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, রাজিবুল আলম তার নিজের ফেসবুক আইডিতে কোনো পোস্ট করেননি। তারই সহকর্মী অপর এক কলেজ শিক্ষকের দেয়া পোস্টের কমেন্টস বক্সে গিয়ে পোস্ট সম্পর্কে কমেন্ট করার দায়ে তার বিরুদ্ধে এই মামলা হতে পারে না বলেই মনে করি।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কুষ্টিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আসামি রাজিবুল আলমের জামিন শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, ট্রেন চলাচল বন্ধ
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। পৌরসভার পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে দুই মাদরাসাছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাটি দেশব্যাপী চরম আলোচিত ঘটনায় রূপ নেয়। আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পোস্ট করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন এই ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় একটি পোস্ট দেন সাদ আহমেদ নামের পাবনার ঈশ্বরদী থানার পাকশী রেলওয়ে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক।
সহকর্মীর এই স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে একই কলেজের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাজিবুল আলম আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এবং তার চাচাত ভাই কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান আতাকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করেন।
কলেজশিক্ষক রাজিবুল আলমের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দুই নেতাকে কটূক্তির এই লেখা দেখে ক্ষুব্ধ হন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. মিজানুর রহমান মিজু। ওই পেজটির স্ক্রিনশট নিয়ে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তিনি কুষ্টিয়া মডেল থানায় ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২)/২৯(১)৩১(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।
গত ১৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুবলীগ নেতার করা মামলায় অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক রাজিবুল আলম উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন নিয়ে নির্দেশনা মতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হাবিবুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠায়। পরে গত ৫ মার্চ রাজিবুল ইসলামের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।