দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে বলে শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা, করোনায় আরও ৫৭ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৪৫০ জনে দাঁড়াল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৭৭ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৩২ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: করোনা চিকিৎসায় দেশে ৮৩৩৫ বেড ও ৪৫৯ আইসিইউ বেড খালি: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
এর আগে বৃহস্পতিবার অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ জন মারা গেছেন এবং ২ হাজার ৩৪১ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ১০.৩৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩২৫ জন। মোট সুস্থ ৬ লাখ ৮১ হাজার ৪২৬ জন। সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫১ শতাংশ।
চীনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন
সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য চীনের তৈরি সিনোফার্ম ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) এক সভায় চিনের তৈরি ভ্যাকসিনটি জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগের জন্য অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানান ডিজিডিএ মহাপরিচালক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: করোনা: এবার চীনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিল সরকার
মাহবুবুর রহমান বলেন, সিনোফার্মের টিকাটি চীনসহ বিভিন্ন দেশে অনুমোদিত। এই টিকার সব ডাটা আমরা পেয়েছি। সরকারিভাবে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এগুলো আমাদের টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের দিয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের একটা পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি আছে। এই কমিটি ১২ সদস্য বিশিষ্ট। তারা এই টিকাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছে। আমরা দেখতে পেয়েছি কার্যকরী ক্ষমতা অনেক ভালো।
ভারত থেকে আনা অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম ডোজের স্বল্পতা দেখা দেয়ায় গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) থেকে করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেয়া কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সরকার। ভারতে করোনা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় এই পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব পরিস্থিতি
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার ২৪৮ জনে।
এছাড়া, ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৯৭১ জনে।
চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ২২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৭৫ হাজার ১৯৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বে আক্রান্ত ১৫ কোটি ছাড়াল
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্তে তৃতীয় ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী ১ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ১ হাজার ১৮৬ জনের।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারতে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩২ জন।
মেক্সিকো মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মারা গেছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৪৭ জন।