রাস্তায় বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা এবং অটোরিকশা চলাচল এবং কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে জনগণের অবাধে চলাফেরার মতো উদাসীনতার মাঝেই দেশে চলমান সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের দ্বিতীয় দিন শুরু হয়েছে।
তবে, ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আগের দিনের মতোই অফিসগামী কর্মীদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পাশাপাশি, রাজধানীতে প্রাইভেট কার, রিকশা ও অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং অনেক রাইড শেয়ারিং সার্ভিসকে যথারীতি চলাচল করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: কুয়াকাটায় লকডাউন প্রচারণায় হামলার শিকার ইউএনও
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শপিংমল বন্ধ থাকলেও অনেক এলাকায় দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। লকডাউন সত্ত্বেও রাজধানীর অনেক এলাকা ঘুরে অলি-গলিতে দোকানপাট খোলা দেখতে পান ইউএনবি-র সংবাদদাতা।
স্বাস্থ্যবিধি অগ্রাহ্য করে মাস্ক ছাড়াই চলাচলকারীদের মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাস্ক বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ইফতেখারুল ইসলাম।
লকডাউনের প্রথম দিনে আন্দোলন ও হামলা
বাংলাদেশ সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের প্রথম দিন সোমবার বিক্ষোভ ও হামলার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী চলমান লকডাউনকে 'অবৈজ্ঞানিক ও আংশিক' মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
নিউমার্কেট এলাকায় লকডাউনে প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা করে দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়ে কয়েকশ দোকান মালিক ও কর্মচারী বিক্ষোভ করে।
এছাড়া, সোমবার রাতে ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলায় এক সরকারি কর্মচারীর অতর্কিত হামলায় এক ব্যক্তি আহত হলে স্থানীয়রা বেশ কয়েকটি অফিস এবং ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়।
উপজেলা পরিষদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, থানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা কৃষি অফিস, এবং সাব-রেজিস্ট্রি অফিসসহ বেশ কিছু ভবনে ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সেই আলোচিত ইউএনও এবারও লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এটিই বাংলাদেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক লকডাউন। গত বছরের ২৬ মার্চ সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন কার্যকর করার পরিবর্তে পরিবহন বন্ধের পাশাপাশি সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৭ হাজার ২১৩ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ৫১ হাজার ৬৫২ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন মানা হচ্ছে না কেরানীগঞ্জে, গণপরিবহনসহ সকল যান চলছে
এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে রেকর্ড আরও ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৩৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩০ জুন ৬৪ জন মারা যান, যা একদিনে মৃতের সংখ্যায় এতদিন সর্বোচ্চ ছিল।