পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সম্প্রতি মিশরের শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে।
বাংলাদেশ ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু অর্থায়ন সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে 'নিউ কালেকটিভ কোয়ান্টিফাইড গোল অন ক্লাইমেট ফাইন্যান্স' আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।
মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের মিলনায়তনে ‘২৭তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন: প্রত্যাশা, প্রাপ্তি এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোকে ২০২৫ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করবে জাতিসংঘ ও এডিবি: পরিবেশমন্ত্রী
শাহাব উদ্দিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের রূপরেখা সম্মেলনের (ইউএনএফসিসিসি) ১৯৭টি সদস্য রাষ্ট্র দীর্ঘ আলোচনার পর ২০ নভেম্বর সকালে 'শারম আল-শেখ বাস্তবায়ন পরিকল্পনা' গ্রহণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সম্মেলন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ মোকাবিলায় একটি নতুন তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তহবিলকে 'কার্যকরী' করার জন্য ও এর 'বিস্তারিত ব্যবস্থা' ঠিক করার লক্ষ্যে কপ-২৮ এর জন্য একটি 'ট্রানজিশনাল কমিটি' গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, সম্মেলনে ' লস অ্যান্ড ড্যামেজ' চূড়ান্তকরণ, আয়োজক নির্ধারণ ও একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশগুলো 'গ্লোবাল গোলস অন অ্যাডাপটেশন' নিয়ে পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছে।
তিনি বলেন, 'অভিযোজন তহবিলে' ২৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) বাস্তবায়নে অর্থায়নে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কপ-২৭ এর ফলাফলে সুশীল সমাজের হতাশা প্রকাশ
এছাড়াও, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগাম সতর্কতা ব্যবস্থার মাধ্যমে পৃথিবীর সকলকে রক্ষা করার জন্য আগামী পাঁচ বছরে তিন দশমিক এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, শারম আল-শেখ বাস্তবায়ন পরিকল্পনা বিশ্বের সব দেশ অভিনন্দনের সঙ্গে গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের মতো আরও ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ মোকাবিলায় একটি নতুন তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে সঠিক বাস্তবায়নের ওপর।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী প্রমুখ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: কপ-২৭: ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে অর্থ দিতে এখনও একমত হয়নি ধনী দেশগুলো