বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘১৯৮৪ সালে মহান জাতীয় সংসদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এই সংসদ জনতার সংসদ। গণতন্ত্র ও গণমানুষের সমর্থনের প্রতি অগাধ বিশ্বাসই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাঁর গণতান্ত্রিক দুর্গম সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস নবীন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
শনিবার কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর বনানীস্থ শেরাটনে 'বাংলাদেশ: উন্নয়নের এক যুগ' নামক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সাংসদদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: স্পিকার
এ সময় কেক কাটার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবনের যাত্রাপথ, তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, শিক্ষা, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে তাঁর নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, বিচক্ষণ কূটনীতি নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন করেন স্পিকার।
স্পিকার বলেন, এক্ষেত্রে ছেলেবেলায় টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর শিক্ষাজীবন, বৈবাহিক জীবন, পারিবারিক জীবন, রাজনীতিতে আসা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন, অনেক গবেষণালব্ধ বিষয় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ আয়োজিত প্রদর্শনীটিতে ফুটে উঠেছে, যা প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য সমাজে বড় সমস্যা: স্পিকার
স্পিকার বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর এদেশের ইতিহাসকে ভিন্নপথে পরিচালিত ও স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। ১৭ মে ১৯৮১ স্বজনহারার বেদনা বুকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে নিহিত আছে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়াবার বার্তা। তখন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হয় নতুন মাত্রা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন বাঁক। বাংলার মানুষ তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল, যা থেকে তাঁর পথচলা। সেখান থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, স্বৈরশাসনের অবসানের সংগ্রাম, সংবিধান অনুযায়ী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম সত্যি বিস্ময়কর বলে উল্লেখ করেন স্পিকার।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন বিস্ময়। নিজ অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে আত্মশক্তিতে বলীয়ান একটি জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছিলাম, তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে নিয়ে গেছেন স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। তিনি তাঁর পিতার মতো এদেশের মানুষকে গভীরভাবে ভালবাসেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে অপূর্ণ স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, সে স্বপ্নের বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বেই প্রতিষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ৮০ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনেইট প্রিফন্টেইন সম্মানিত অতিথি হিসেবে এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত সূচনা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।