ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ ও হামলার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সঙ্গে চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার কিরণ কুমার কে জানিয়েছেন, তিন উপপরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং একজন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ 'ক্লোজড' করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় নিউ ক্যাপিটাল কমপ্লেক্স (এনসিসি) থানায় একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে আগরতলা হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির বিক্ষোভকারীদের একটি বড় দলের 'সহিংস বিক্ষোভ ও হামলায়' 'গভীর ক্ষোভ' প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে এই 'জঘন্য হামলা' এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ২৮ নভেম্বরে কলকাতায় অনুরূপ সহিংস বিক্ষোভের মতই ছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আগরতলার এই বিশেষ কাজটি কূটনৈতিক মিশনের আইনের লঙ্ঘন। একইভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন, ১৯৬১- এর লঙ্ঘন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব
ভারত সরকার পৃথক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং দেশে তাদের উপসহকারী হাইকমিশনগুলোর জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
যেহেতু কূটনৈতিক মিশনগুলোকে যেকোনো ধরণের অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি থেকে রক্ষা করা স্বাগতিক সরকারের দায়িত্ব, তাই বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে এই ঘটনার সমাধানের জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার এবং ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: জনগণকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান তারেক রহমানের
কূটনীতিক এবং অ-কূটনৈতিক কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তাসহ ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে আর কোনো সহিংসতা যাতে না ঘটে সে জন্য পদক্ষেপ চেয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে বিক্ষোভকারীদের প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে।
গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামে ইসকন সমর্থকদের বিক্ষোভের মধ্যে সংঘর্ষের সময় নিহত হন সরকারি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩২)।
আরও পড়ুন: ভারত সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল-গঠনমূলক সম্পর্ক চায়: ভার্মা