বাংলাদেশে নিযুক্ত ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাই কমিশনাররা নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচর পরিদর্শন করেছেন।
শনিবার অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এবং হাই কমিশনাররা রোহিঙ্গাদের জন্য সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ভাসানচর পরিদর্শন করতে আসেন।
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ দফায় ভাসানচরের পথে ২৪৯৫ রোহিঙ্গা
রাষ্ট্রদূতদের ভাসানচরে সরকারি নেতৃত্বাধীন সফরে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
এর আগে, জাতিসংঘের একটি দল ১৭-২০ মার্চ পর্যন্ত ভাসানচর পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে কূটনীতিকরা দ্বীপটির কিছু সুবিধা ও পরিষেবা দেখার সুযোগ পান।
এ সময় তারা স্থানান্তরিত রোহিঙ্গা, কর্তৃপক্ষ এবং সেখানে বসবাসরত ও কর্মরত অন্যান্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: পঞ্চম ধাপে ভাসানচর পৌঁছেছে ২২৫৭ রোহিঙ্গা
একটি কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানায়, কূটনীতিকরা যা দেখেছেন তার ভিত্তিতে রবিবার বা সোমবার একটি যৌথ প্রেস রিলিজ প্রকাশ হতে পারে।
কূটনীতিকরা বিকাল ৫টার পর ঢাকায় ফিরে আসেন।
পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ সরকারের বিধিবিধান ও নির্দেশনা মেনে কোভিড-১৯ প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: চতুর্থ দফায় ভাসানচর যাচ্ছেন ৪ হাজার রোহিঙ্গা
রাষ্ট্রদূতরা জানান, তারা ভাসানচর প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সাথে সংলাপ অব্যাহত রাখার অপেক্ষায় আছেন।
তারা মনে করেন, নীতিমালা ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে বিশেষত বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘের মধ্যে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকার ১ লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা নেয় যেখানে বর্তমানে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা সাময়িকভাবে বাস করছে এবং প্রতিবছর সেখানে জন্ম নিচ্ছে হাজার হাজার শিশু।
আরও পড়ুন: ভাসানচর: ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছেন রোহিঙ্গারা
সরকার জানায়, কক্সবাজারের এই হতাশাগ্রস্ত লোকদের দীর্ঘদিন থাকার কারণে সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি অবনতির কারণে সরকার জরুরিভাবে ভাসানচরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়।
সূত্র অনুযায়ী, দ্বীপটির উন্নয়নে সরকার ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ১৩ হাজার একর ভাসানচর দ্বীপে বছরব্যাপী মিঠা পানি, চমৎকার হ্রদ ও যথাযথ অবকাঠামো ও আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের প্রশংসায় ওমান
এর মধ্যে বিদ্যুৎ ও পানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, কৃষি জমি, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, দুটি হাসপাতাল, চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, গুদাম, টেলিযোগাযোগ পরিষেবা, থানা, বিনোদন ও শিক্ষা কেন্দ্র, খেলার মাঠ ইত্যাদি রয়েছে।
এটি কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোর অস্থায়ী কাঠামোগুলোর মতো নয়, ভাসানচরের আবাসনটি কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করা যা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও অক্ষত থাকবে।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর জোরপূর্বক নয়: ঢাকা
ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ভাসানচরের কাঠামোগুলোর শক্তি প্রমাণ করে দিয়েছে বলে এটি জানায়।
দ্বীপের সক্ষমতা নিয়ে কিছু মহলের আশঙ্কা থাকলেও ভাসানচর বিশাল ঝড়ের বিরুদ্ধে রূখে দাঁড়িয়েছিল।
জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা সত্ত্বেও, দ্বীপের ১,৪৪০টি বাড়ি এবং ১২০ টি আশ্রয়কেন্দ্র অক্ষত ছিল।
দ্বীপটি নৌপথ দিয়ে মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত।