শনিবার দুপুরে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার শপথ নেন। মন্ত্রী তাদের হাতে তাৎক্ষণিকভাবে পুনর্বাসনের জন্য জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা ও ফুল তুলে দেন। পরে আরও ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান বলেন, আত্মসমর্পণকারীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে আগের কাজে ফিরে গেলে কঠোর পরিণতি হবে।
খুন ও ধর্ষণ ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়টি সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্নভাবে যারা বিপথে চলে গেছেন, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই ফিরে আসবেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করে শান্তিপূর্ণ দেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, দস্যু, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠন করা হবে। যারা এসব অপকর্মে জড়িত আছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘যেসব জলদস্যু আত্মসমপণ করেননি তারা ভুল করেছেন। মহেশখালী, এমনকি পুরো কক্সবাজার জেলায় কোনো দস্যুতা চলবে না। এখনও যারা বিপথগামী, তারাও ফিরে আসুন। স্বাভাবিক জীবনে না ফিরলে কঠিন পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।’
যেসব দস্যু আত্মসমপর্ণ করেননি তাদের তালিকা পুলিশের কাছে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা জলদস্যুদের গডফাদার তাদের নামও আছে পুলিশের কাছে। নতুন করে কোনো জলদস্যু বানানো হলে গডফাদারদের আটক করা হবে।
অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, ২০১৮ সালের ১৭ মে থেকে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ও বিশেষ অভিযান শুরু হওয়ার পর ১৯৮ জন অস্ত্রধারী, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। ‘সুতরাং মহেশখালীতে আর সন্ত্রাস করা যাবে না। এখনও যারা আত্মসমর্পণ করেননি তারা দ্রুত আত্মসমর্পণ করুন নতুবা পরিণতি শুভ হবে না।’
এর আগে ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর মহেশখালীতে ৪৩ জন সশস্ত্র জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেন। আর চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে আত্মসমর্পণ করেন ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী।