বুধবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গুলশানের নগর ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনকালে মেয়র এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছেন, অথচ আমরা কি এ শহরকে একটু ভালোবাসতে পারি না? আমরা কি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলতে পারি না? আমরা কেন শুধু চিন্তা করি আমি আমি আমি? কেন আমরা বিভিন্ন নদী, খাল দখল করি? মুক্তিযুদ্ধকালে দেশের জন্য তারা বুকে গুলি খেয়েছেন। আমরা শুধু নিজের চিন্তা করছি।’
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রত্যয় নিতে হবে: তাপস
মেয়র নগরবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা করি আমরা শহরকে ভালোবাসব। নিজের ঘরকে যেভাবে সুন্দর রাখি, এ শহরকেও একইভাবে ভালোবাসব। আমরা যেন যত্রতত্র ময়লা না ফেলি। আমরা যেন ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলি। ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করে রাস্তা পার হই। জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করি। পদ্মা সেতু যেখানে আমরা তৈরি করে ফেলতে পেরেছি, এ শহরকেও আমরা সুন্দর করতে পারব। যত বাধাই আসুক না কেন কোনো বাধাই আমরা মানব না।’
আরও পড়ুন: বনানী সড়ক সংলগ্ন সেতু ভবন সরাতে হবে: ডিএনসিসি মেয়র
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছে, যারা এ দেশকে পঙ্গু করতে চেয়েছিল, রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনী, সেই অপশক্তিই আবার উঠে পড়ে লেগেছে। যারা ভাস্কর্য ভাঙছে, মিথ্যা ফতোয়া দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
পরে মেয়র আতিকুল বনানী বিদ্যা নিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মুজিব কর্নার উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: নগরবাসীকে নিয়ে সবার ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করলেন মেয়র আতিক
ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান ও জাকির হোসেন বাবুল, কলেজের অধ্যক্ষ প্রিয়াঙ্কা হালদার শিখা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বনানী বিদ্যা নিকেতন থেকে ফেরার পথে বনানী মাঠের কাছে ক্ষুদে ‘মুক্তিযোদ্ধাদের’ দেখে গাড়ি থেকে নেমে তাদের উৎসাহ দেন এবং তাদের সাথে ছবি তোলেন মেয়র।
তিনি দুপুরে ডিএনসিসির নগর ভবনে বিজয় দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: আনিস ভাই বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং কাজে হাত দিয়েছিলেন: মেয়র আতিক
অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ‘পরবর্তী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে আমরা ‘পরম্পরা’ নামে বইয়ের গাড়ি চালু করেছি। এ গাড়িগুলো প্রতিটি ওয়ার্ডে যাচ্ছে। আমরা যেন এখান থেকে বই কিনে আমাদের সন্তানদের, পরবর্তী প্রজন্মকে জানাই।’
মেয়র জানান, আগামী ১ জানুয়ারি ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ উদ্বোধন করা হবে। ‘এর ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের জনগণের মুখোমুখি হতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে সব কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাকে। জনগণ তাদের অভিযোগ আমাদের অ্যাপের মাধ্যমে জানাবেন। আমাদের তার সমাধান দিতে হবে। এ জন্য ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: মৌলবাদী শক্তি নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত সজাগ থাকার আহ্বান তাপসের
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, বিভাগীয় কর্মকর্তা, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।