তবে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলের সুবিধা দেয়া সম্ভব নয় বলে জানালেও পরীক্ষার আগে হলগুলো পুনরায় চালু করা নিয়ে শোরগোল বাড়ছে।
মহামারির কারণে ঢাবির হলগুলো খুলে দেয়ার বিষয়ে রাজি না হয়ে উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীরা ঢাকায় নিজেদের থাকার জায়গা খুঁজে নিতে পারবে।’
আরও পড়ুন: ঢাবির অনার্স, মাস্টার্সের ফাইনাল পরীক্ষা ২৬ ডিসেম্বর শুরু
তবে ছাত্র সংগঠনগুলো এ সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছে। তারা বলছে, বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বিশেষ করে যারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন তাদের পক্ষে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে ভাড়া দিয়ে থাকার সামর্থ্য নেই।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ছাত্র ফ্রন্ট এবং ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত আকারে আবাসিক হলগুলো পুনরায় চালু করা হোক অথবা শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাবির বিভাগীয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হুসেন বলেন, ‘সেশনজট এড়াতে এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের পথ সুগম করার জন্য পরীক্ষা নেয়া জরুরি। তবে আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বাস্তবতসম্মত মনে হচ্ছে না।’
সাদ্দাম বলেন, মেয়ে শিক্ষার্থীরা আর্থিক সমস্যার মুখে পড়তে পারেন। তাই এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
আরও পড়ুন: ঢাবির দুই শিক্ষককে অব্যাহতি, একজনকে যোগদানের অনুমতি
পরীক্ষা শুরুর আগে আবাসিক হল পুনরায় চালু করার দাবিতে গত সপ্তাহে ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেছেন ঢাবির শিক্ষার্থীরা।
মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে নিজ জেলা শহর পাবনায় অবস্থান করা ঢাবির ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফরিহা সিন্থিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তকে যুক্তিহীন বলে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বিতর্কের মুখে সান্ধ্যকালীন এমবিএ ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করল ঢাবি
তিনি বলেন, ‘হল বন্ধ থাকলে ঢাকায় আমরা কোথায় থাকব? যেসব শিক্ষার্থীর ঢাকায় বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন থাকেন তাদের পক্ষেও করোনা পরিস্থিতিতে আবাসনের ব্যবস্থা করা অনেকটা অনিশ্চিত। সেই সাথে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ঝুঁকি আরও বাড়ছে। এছাড়াও, বেশির ভাগ বাড়িওয়ালা বাসাবাড়ার যে অগ্রিম জামানত দাবি করছেন সে টাকাই জোগাড় করতে পারছি না।’
বিষয়টি নিয়ে ‘স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট শেয়ার করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজারেও বেশি শিক্ষার্থী তাদের মতামত দিয়েছেন যে কর্তৃপক্ষের উচিত পরীক্ষার জন্য হলেও সীমিত আকারে আবাসিক হলগুলো পুনরায় চালু করা। তবে, ওই পোস্টে হল খোলার বিপক্ষে মত দিয়েছেন ১৭০ শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঢাবির অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অন্য কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে হলগুলো পুনরায় চালু করার কথা এখনই ভাবছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’