কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বালারহাটের আদর্শ মোড় থেকে তিনকোণা পর্যন্ত সাড়ে ৩০০ মিটারের সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হচ্ছে না। ওই সড়কে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমে মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। খানাখন্দে ভরা সড়কটি এখন মানুষের চলাচলের অযোগ্য।
সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। সড়কের পিচ ও ইটের খোয়া উঠে গিয়ে ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাধ্য হয়ে কাদাযুক্ত বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে লোকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলাচল করছেন। ওই সড়কে যানবাহন চলাচলের সময় পানির ছিটা পথচারীর শরীরে যাচ্ছে।
সড়কের দুই পাশে স্থাপনা থাকায় পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। এ পানি শুকাতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগে।
স্থানীয় বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বালারহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বালারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুরুষাফেরুষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাফল্য কিন্ডারগার্টেন, আশা ও গ্রামীণ ব্যাংক ও গজেরকুটি ও বালাতাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বালারহাট বিজিবি ক্যাম্প এই সড়ক দিয়েই যেতে হয় এবং ওই সড়কের পাশেই নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ।
আরও পড়ুন: পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মোবাইল কোর্ট, ৪৫০০০ টাকা জরিমানা আদায়
প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন সড়কটি দিয়ে। স্কুল-কলেজ যাতায়াতের সময় সড়কের কাদাপানি ছিটকে পোশাক-পরিচ্ছদে পড়ে নষ্ট হওয়া নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। সব সময় অভিভাবকরা থাকছেন চরম দুশ্চিন্তায়। মোটরসাইকেল, অটোভ্যান, অটোরিক্সা, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রায়শই ছোট বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
অন্য দিকে বালারহাট বাজারের পশ্চিম দিকে নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা ভূমি অফিস ও বালারহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, গরু ও সুপারি পট্টী, বালারহাট ডিএস দাখিল মাদরাসা যাওয়ার মূল সড়কটির অবস্থা খুবই করুণ। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করা ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানিতে পরিণত হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজারও পথচারী।
বালারহাট বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম রেজা, পিটন পাল, আবু তারেক ও রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তারা জানান, ‘বালারহাটর সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গরবার হাট বসে। বালারহাটে পশ্চিমে অযোগ্য সড়কের পাশেই বসে গরু, ছাগল ও সুপারির হাট৷ কাপড়-চোপড়।’
‘অন্য দিকে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে ধান, আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগি ও সাইকেলসহ সব ধরনের জিনিস এই বাজারে বেচাকেনা হয়। দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এই বাজারে। এই বাজার থেকে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পায়। অথচ সামান্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পাকা সড়কে পানি জমে থাকছে। চেয়ারম্যান, মেম্বররা এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই যাতায়াত করেন। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না,’ বলেন তারা।
আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী শুভশ্রী রায়, তানজিলা আক্তার ও নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হিয়ামনি জানান, ‘প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। বিকল্প সড়ক না হওয়ায় বাধ্য হয়ে কাদাযুক্ত সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। বৃষ্টির সময়তো একদমই চলাচলের অনুপযোগী থাকে। এমনকি বর্ষা ছাড়াও শুষ্ক মৌসুমেও ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।’