বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ইউরোপ অফিস এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ইউরোপের ৫৩টি দেশে আরও কমপক্ষে সাত লাখ মানুষ মারা যাবে।
ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অবস্থিত সংস্থাটির ইউরোপ অফিস এক বিবৃতিতে করোনার তীব্র ও মৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা ক্রমে হ্রাস পাওয়ার একাধিক উদাহরণ দিয়েছে। পরিস্থিতি উন্নয়নে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের জনগণকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ‘বুস্টার ডোজ’ দেয়া, ষাটোর্ধ্ব, দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণ করতেও বলা হয়েছে এই বিবৃতিতে।
ডব্লিউিইচও’র পক্ষ থেকে এতদিন ধনী দেশগুলোকে বুস্টার ডোজ না দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর বদলে দরিদ্র দেশ, যারা টিকা কেনার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে, সেসব দেশের নাগরিকদের টিকা পাওয়ার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যাপক ভ্যাকসিনেশনের হার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের ঝুঁকি কমাতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
এর বদলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরোপের অধিবাসীদের পূর্ণ ডোজ টিকা নিতে, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং ভাইরাসের বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
ডব্লিউএইচও’র ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক ডা. ক্লুজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, বর্তমানে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় করোনা পরিস্থিতি খুবই খারাপের দিকে এগুচ্ছে। সামনে আমরা একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের আশা ছাড়া উচিত না, এর বদলে সরকার, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, এবং সাধারণ নাগরিক- সবাই মিলে মহামারি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংস্থাটির এক রিপোর্টে জানা যায়, গত সপ্তাহে করোনায় ইউরোপে প্রতিদিন কমপক্ষে চার হাজার ২০০ জন মানুষ মারা গেছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় যা প্রায় দ্বিগুণ।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্সের সাথে করা চুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
এই বৃদ্ধির তিনটি কারণ হল- ভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা রূপ, মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্বের মতো বিধিনিষেধ মানায় শিথিলতা এবং ইউরোপীয় জনসংখ্যার বিশাল অংশের টিকা নেয়ায় অনীহা।
ডব্লিউএইচ’র ইউরোপ শাখার প্রকাশিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা আশঙ্কা করছি ইউরোপের ২৫টি দেশের হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়বে এবং ২০২২ সালের ১ মার্চের মধ্যে ৫৩টি দেশের মধ্যে ৪৯টি দেশের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) মারাত্মক চাপে পড়বে।
আরও পড়ুন: পরবর্তী মহামারি আরও ভয়াবহ হতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা