বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশে লাগামহীন হারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে মানুষের না খেয়ে থাকার মতো অবস্থা হয়ে গেছে।’
শনিবার সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তরিকুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স,বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
এ সময় দ্রব্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এক রাতের মধ্যে ডিজেল আর কেরোসিনের দাম ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বলতে পারেন এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার এমন সময় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালো যখন দ্রব্যমূল্য বাড়তে বাড়তে এমনিতেই আকাশচুম্বী হয়ে যাচ্ছে। তার মানে বলা যায়, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য একসাথে দ্বিগুণ বাড়ানো হলো। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সাধারণ মানুষ না খেয়েই মারা যাবে।’
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে সরকারের যুক্তি ‘অগ্রহণযোগ্য’: ফখরুল
এ সময় ফখরুল বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান পরিবহন ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে গণমুখী সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে ফখরুল আরও বলেন,‘আসুন, এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই এবং জনগণের সাথে রাজপথে নেমে আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করি।’
বিএনপির এই জেষ্ঠ্য নেতা বলেন, ‘জনগণ জেগে উঠেছে,তারা এখন তাদের ভোট ও অন্যান্য অধিকার আদায়ে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছে। তাই সরকার জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমান সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে অন্যের ওপর নির্ভরশীল একটি ব্যর্থ ও পরাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী মাঠ খালি করছে সরকার: ফখরুল
সরকার বাংলাদেশকে ঋণগ্রস্ত করার জন্য উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের চারপাশে তাকাই, তবে আমরা দুর্নীতি, লুট আর চুরি ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত সাত মাসে সহিংসতায় ক্ষমতাসীন দলের ৮৪ নেতা-সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে তারা (আ.লীগ নেতা) নিজেরাই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়ছে। তারা লুটপাট, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নানা সমস্যায় লিপ্ত হলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।’
ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজার সময় ক্ষমতাসীন দলই সাম্প্রদায়িক ঘটনার উসকানি দিয়েছে। আবার তারাই বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’
তিনি বলেন,‘যেকোনো জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রতিপক্ষকে দমন করতে এগুলো তাদের পুরনো স্টাইল। তারা ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও একই কাজ করেছিল।’
আরও পড়ুন:আ’লীগের অধীনে কোন নির্বাচনের ফাঁদে পা দিচ্ছি না: ফখরুল