খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে স্লো পয়জনিং করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেছেন, রাজপথকে প্রকম্পিত করে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। গুলি খেতে হবে, রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করতে হবে।
বুধবার বিকেলে সিলেটের টুকেবাজার এলাকায় বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবিতে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুকু বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দী। তিনবারের সাবেক সফল প্রধামন্ত্রীকে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ফরমায়েসী রায়ে সাজা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া আজ পর্যন্ত যত জায়গা থেকে যতবার নির্বাচন করেছেন, সবগুলো নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। আর খালেদা জিয়াকে যিনি বন্দী করে রেখেছেন তিনি নির্বাচনে সাদেক হোসেন খোকা ও মেজর মান্নানের কাছে পর্যন্ত পরাজিত হয়েছেন। আর পরাজিত হওয়ার পরে ঢাকায় আর নির্বাচন করেননি। জাতি সেই ইতিহাস ভুলে যায়নি।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
তিনি বলেন, শুধু উন্নয়ন-উন্নয়ন করেন। দেশে উন্নয়নের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। সাহস থাকলে একবার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখুন। নৌকার প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। আর কোন ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবেনা, খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি রাজপথের আন্দোলনেই ফয়সালা হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তির আন্দোলনে যদি আমার দেশের মানুষের গুলি আমার শরীরে লাগে, তবে আমি গর্বিত শহিদ। প্রতীকী নয়, আসল কাফনের কাপড় পরে জেলের তালা ভেঙে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের আগে সংলাপ তামাশা মাত্র: বিএনপি
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিলেন এবং এর পরের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েছিলেন। একেই বলে গণতন্ত্র। তিনি চাইলে সেদিন আন্দোলন দমিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, কারণ তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের ইতিহাস পাল্টিয়ে দিয়েছে। আজকের ইতিহাসে একটামাত্র পাতা আছে, যে ওরা ছাড়া স্বাধীনতাযুদ্ধে আর কেউ যায় নি। তবে বাকীরা গিয়ে কী করেছে? মূলত এ দেশের খেঁটে খাওয়া মানুষ, লুঙ্গি পরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয়, সিলেট বিভাগীয় ও জেলা-মহানগর বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এদিকে, বিএনপির পূর্ব ঘোষিত এই সমাবেশে সকাল থেকে দলে দলে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। বিকাল ৩টার দিকে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় টুকেরবাজারের মাঠ।
বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি-ছাত্রলীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি