তিনি বলেন, ‘উপহার হিসেবে টিকা পাঠানোর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানাই।’
সেই সাথে তিনি উল্লেখ করেন যে ক্রয় করা টিকাও পরিকল্পনা অনুযায়ী শিগগিরই ভারত থেকে আসবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অ্যালামনাইদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ ভারত থেকে যে টিকা কিনেছে তা ২৫-২৬ জানুয়ারি নাগাদ দেশে এসে পৌঁছাবে।
আরও পড়ুন: টিকা উপহার শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির দৃঢ় সম্পর্কের নিদর্শন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঢাকায় ভারতের উপহারের ভ্যাকসিন সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিশ্রুতির অংশ: রাষ্ট্রদূত
তিনি বলেন, টিকাদান নিয়ে তারা কীভাবে এগিয়ে যাবেন সেই পরিকল্পনা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। ‘দেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি পারে। ‘এটা আমরা আশা করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মূল বক্তা ছিলেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান।
ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এএসএম মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ সামাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর মানপত্র পাঠ করেন।
এর আগে, আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী উপহারের কোভিড-১৯ টিকা হস্তান্তর করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতে দ্বিতীয় ধাপে ভ্যাকসিন নেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি
ভারতে করোনার টিকা নেয়ার পর ৪৪৭ জন অসুস্থ
দেশে এলো ভারতের উপহারের ২০ লাখ ডোজ করোনার ভ্যাকসিন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এ সময় বলেন, ভারতের উপহার হিসেবে কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ বাংলাদেশের পাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার দৃঢ় সম্পর্ক ও শুভেচ্ছার নিদর্শন।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকাগুলো গ্রহণ করে তিনি বলেন, ‘এটি এক ঐতিহাসিক দিন। তারা (হাসিনা ও মোদি) দৃঢ় সম্পর্ক অর্জন করেছেন! এটি সেই বন্ধনের নিদর্শন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দিন থেকেই কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন।
ভারত থেকে আজকের উপহার অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার নিদর্শন উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশ এখনো টিকা নিতে পারেনি এবং বিশ্বে প্রথম টিকা নেয়া দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
প্রতিবেশী প্রথম নীতির আওতায় ভারতের বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এক ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ভারতে টিকা উৎপাদন করার সাথে সাথে বাংলাদেশকে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন কূটনীতির লড়াইয়ে নেমেছে যেসব দেশ
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে আগুনে নিহত ৫
সেরামের টিকা পেতে সমস্যা হবে না: বেক্সিমকো
এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের মধ্যে চলমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন উভয় নেতা।
একই অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির- দেয়া প্রতিশ্রুতির এবং ভারতের প্রতিবেশী প্রথম নীতির অংশ।
পারস্পরিক বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এবং ভারত একসাথে কোভিড-১৯-এর মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়বে বলেও উল্লেখ করে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত।
চলতি মাসে ভারত থেকে ক্রয় করা টিকার ৫০ লাখ ডোজ আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। চুক্তি অনুসারে আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রায় তিন কোটি ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে।