সোমবার লঞ্চ দুর্ঘটনার পর নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘নিহত প্রতিটি পরিবারকে দেড় লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে এবং ঢাকা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে লাশ দাফনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।’
উৎসুক জনতার ভীড়ের কারণে উদ্ধার কাজ ব্যহত হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি কোনো দুর্ঘটনা হতে পারেনা, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সেই সাথে নৌপুলিশ কোষ্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় যৌথভাবে সদরঘাটের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে বলে জানিয়েছেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এর আগে, ঢাকার শ্যামবাজার এলাকায় ১৫০ জনের অধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় সোমবার ছয়জন নারী ও তিনটি শিশুসহ কমপক্ষে ৩০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সদরঘাট নৌ থানার ওসি রেজাউল করিম ভূঁইয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশগুলো হস্তান্তরের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, সকাল ৮টায় মুন্সীগঞ্জ জেলার কাঠপট্টি থেকে লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের উপসহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) শাজাহান শিকদার জানান, বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটে লঞ্চটি শনাক্তের পর লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, সকাল ৯টা ৩৩ মিনিটের দিকে মনিং বার্ড ফরাশগঞ্জ ঘাটে ভেড়ার সময় বেগার দিতে গিয়ে ময়ুর-২ লঞ্চের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এবং উদ্ধার কাজ শুরু করেন, বলেন এ কর্মকর্তা।
ইউএনবির কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি ঘটনাস্থল থেকে জানান, ১৫০ জনের অধিক যাত্রী নিয়ে ‘এমভি মর্নিং বার্ড’ লঞ্চটি ডুবে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী, ৫০ জন যাত্রী স্থানীয়দের সহায়তায় সাঁতরে পাড়ে উঠে আসেন।
বিআইডব্লুউটিএর যুগ্ম পরিচারক একেএম আরিফ উদ্দিন জানান, বেশিরভাগ যাত্রী উপরে উঠতে সক্ষম হয়েছে। নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা কাজ করছে।
এদিকে, বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবিতে প্রাণহানির ঘটনায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক জানিয়েছেন।
এদিকে, লঞ্চডুবির ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ওই কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) মো. রফিকুল ইসলাম খানকে আহ্বায়ক এবং বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) মো. রফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- নৌপরিবহন অধিদপ্তরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন জসিম উদ্দিন সরকার, বিআইডব্লিউটিসি’র প্রধান প্রকৌশলী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, নৌ পুলিশের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি।
কমিটি দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন, দুর্ঘটনার জন্য দায়ি ব্যক্তি/সংস্থাকে শনাক্তকরণ এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদান করবে।