বেনাপোল কাস্টমসের দুটি সিএন্ডএফ এজেন্টেস লাইসেন্স বাতিল এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন আমদানি-রপ্তানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর ফলে দুই দেশের বন্দর এলাকায় পচনশীল পণ্যসহ শত শত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে।
উল্লেখ্য গত ২ মার্চ ভারত থেকে বন্ড লাইসেন্স (শুল্ক মুক্ত) এর মাধ্যমে আমদানি করা ডেনিম ফেব্রিক্সের ট্রাকে বিশেষভাবে লুকিয়ে আনা প্রায় অর্ধকোটি টাকার শাড়ি, থ্রি পিচ, বাংলা মদ, ফেন্সিডিল, বিদেশি সিগারেট, ওষুধ, কারেন্ট জালসহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার সঙ্গে ভারতীয় ড্রাইভার সরাসরি জড়িত থাকলেও ট্রাকসহ ড্রাইভারকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আমদানি করা ডেনিম ফেব্রিক্সের আমদানিকারক ঢাকাস্থ অনন্ত ডেনিম টেকনোলজি লিমিটেড ও ফ্যাশান ফোরাম লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনায় বুধবার বেনাপোলের শিমুল ট্রেডিং এজেন্সি ও আইডিএস গ্রুপ নামে দুটি সিএন্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করেছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউস। পাশাপাশি সিএন্ডএফের কর্মচারীদের নামেও মামলা করেন বেনাপোল পোর্ট থানায়।
এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষীদের আটক না করে সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল ও কর্মচারীদের নামে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন, সিএন্ডএফ স্টাফ এসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি এক যৌথ সভায় আমদানি-রপ্তানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। লাইন্সেস পূর্ণবহাল ও মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, ভারতীয় এক শ্রেণির ট্রাক চালক অর্থের প্রলোভনে দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে বৈধ আমদানি পণ্যের সঙ্গে চোরাচালানী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ পণ্য পাচার করে আসছে। এর আগে অসংখ্য ট্রাক অবৈধ মালামালসহ বেনাপোল কাস্টমস বিজিবি’র হাতে ধরাও পড়েছে। অপরদিকে পেট্রাপোল বিএসএফ ও পুলিশ ভারতীয় ট্রাক এর মধ্য থেকে সোনা, ডলার, পাসপোর্ট, মোবাইল, রূপার গহনাসহ ট্রাক চালককে আটক করেছে। ভারতে ট্রাক চালক আটক হলেও বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারতীয় কোন ট্রাক চালককে আটক না করে ছেড়ে দেয়। এখানে আমদানিকারক ও সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফকে দায়ী করা হয়। অথচ তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। এ রকম ঘটনায় ইতোমধ্যে ১০টি সিএন্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এসব ঘটনায় বন্দর ব্যবহারকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখাসহ কাস্টমস ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি মিথ্যা ঘোষণায় বৈধ চালানের আড়ালে ফেনসিডিল, সিগারেট, ভারতীয় মদসহ বিভিন্ন চোরাচালান পণ্যসহ বন্দর থেকে ভারতীয় একটি ট্রাক আটক করা হয়। এ অভিযোগে দুটি সিএন্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করে শোকজ করা হয়েছে। অবৈধ পণ্য আমদানির অভিযোগে থানায় মামলাও করা হয়েছে। আমদানি-রপ্তানিসহ কার্যক্রম চলমান রাখতে সংশ্লিষ্ট বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।