ভবিষ্যতে মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষা তথা জাতীয় প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সর্বদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলাসহ দেশের আর্থসামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ভবিষ্যতেও মাতৃভূমির অখন্ডতা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন:আল জাজিরার প্রতিবেদন সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: সেনাপ্রধান
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় যশোর সেনানিবাসের এসটিসি অ্যান্ড এস প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিটের রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান ১৬ ও ১৭ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন এবং ১০ ও ১১ সিগন্যাল ব্যাটালিয়নের কালার প্যারেডে অংশগ্রহণ শেষে পতাকা প্রদান করেন।
আরও পড়ুন:দেশের প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের নির্দেশ সেনাপ্রধানের
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে এসটিসি অ্যান্ড এস প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত হলে যশোর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. নুরুল আনোয়ার তাকে অভ্যর্থনা জানান।
এরপর প্যারেড কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. শাহাবউদ্দিনের নেতৃত্বে কালার প্যারেডে অংশগ্রহণকারী ব্যাটালিয়নদের সম্মিলিত চৌকষ দল কুচকাওয়াজ প্রদর্শন এবং সেনাবাহিনী প্রধানকে সালাম প্রদান করেন।
আরও পড়ুন:সরকারের নির্দেশে যেকোনো সংকটে সেনাবাহিনী কাজ করবে: সেনাপ্রধান
পতাকা প্রদান শেষে সেনাপ্রধান বলেন, ‘ব্যাটালিয়নের রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।’
এ জন্য তিনি জিওসি ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার যশোর এরিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আজকের এ বিশেষ দিনে আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি বাঙ্গালি জাতীকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আর তার ফলশ্রুতিতে আজ আমরা স্বাধীন ও সার্ভভৌমত্ব দেশ বাংলাদেশ পেয়েছি।
এছাড়া তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ বীর শহীদ,বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে পার্বত্য চট্রগ্রামের সন্ত্রাস দমন অভিযান, জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডে আত্মদানকারী ১ হাজার ৮৮৬ জন শহীদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের বিশেষ অর্জন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে এ অর্জন প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম ও অবিচল নেতৃত্বের অবদান। সেই সাথে সেনাবাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আস্থা আমাদেরকে আরও নিরলসভাবে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ একটি আধুনিক, যুগোপযুগী এবং চৌকসবাহিনী হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বলে সেনাপ্রধান উল্লেখ করেন।
জেনারেল আজিজ রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্ত ইউনিটদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি যে কোন ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান এবং পবিত্র আমানত। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে এই বিরল প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে আরও অধিক গৌরবের ও আনন্দময়।
তিনি কর্মদক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম ও কর্তব্য নিষ্ঠার স্বীকৃতি স্বরুপ প্রাপ্ত পতাকার মর্যাদা রক্ষা এবং দেশ মাতৃকার যে কোন প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ইউনিট সমূহকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সেনাকর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদবীর সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।