বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কর্মকর্তারা বলছেন, সংক্রমিত দেশসমূহের সীমান্ত বন্ধ করে ওমিক্রন ছড়ানো বন্ধ করা যায়। তবে শুধু সীমান্ত বন্ধ না করে, ডেল্টার বিরুদ্ধে করা লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামা উচিত।
শুক্রবার ফিলিপাইনের ম্যানিলা থেকে সম্প্রচারিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. তাকেশি কাসাই বলেছেন, একদিকে যেমন কয়েকটি দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, অন্যদিকে কিছু দেশে আবার ক্রমে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
কাসাই বলেন, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সময় পেছাতে পারে, ফলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আরও বেশি সময় পাওয়া যাবে। প্রতিটি দেশেরই এর বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রস্তুতি নেয়া উচিত।
কাসাই আরও বলেন, এরমধ্যে সবচেয়ে ইতিবাচক খবর হল, ওমিক্রন সম্পর্কে আমাদের কাছে বর্তমানে যে তথ্য রয়েছে, এর ভিত্তিতে বলা যায় এতদিন ধরে অনুসরণ করা স্বাস্থ্যবিধিতে ওমিক্রনের জন্য নতুন কোনও পরিবর্তন প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন: ওমিক্রন: ৭ আফ্রিকান দেশের যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন
কাসাই বলেছেন, মিউটেশনের সংখ্যার কারণে ওমিক্রনকে নিয়ে অনেকের মধ্যেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা যায়, এটি ভাইরাসের অন্যান্য রূপের চেয়ে বেশি সংক্রামক হতে পারে। অনেকের প্রশ্ন, এতে আক্রান্ত হলে মানুষ কি আরও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা এটা কি করোনা টিকার সুরক্ষাকে বাতিল করে দেবে?
এর উত্তর এখনও আমাদের কাছে নেই, এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার জন্য আরও পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক জরুরি পরিচালক ড. বাবাতুন্ডে ওলোওকুরে বলেছেন, এখন পর্যন্ত পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের চারটি দেশে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, হংকং, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভারতে প্রথম ওমিক্রন শনাক্তের কথা জানা গেছে।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ফিলিপাইনের সরকারি মহামারি ব্যুরোর পরিচালক আলথিয়া ডি গুজম্যান বলেছেন, গত দুই সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশটিতে আসা ৭১ জনের মধ্যে একজন করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। তবে তিনি ওমিক্রন আক্রান্ত কি না তা শনাক্তের জন্য এখনও পরীক্ষা চলছে।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রথম ২ জনের ওমিক্রন শনাক্ত
ডি গুজম্যান আরও বলেন, আমরা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ওমিক্রন মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত করছি।
ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক জরুরি পরিচালক ড. বাবাতুন্ডে ওলোওকুরে ম্যানিলায় বলেছেন, দেশগুলোর এখন কী করা উচিত সে প্রসঙ্গে, গত কয়েক বছরের আমাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। সেইসাথে কীভাবে আরও টেকসই উপায়ে ভবিষ্যৎ মহামারির সাথে মোকাবিলা করা যায় তা আলোচনা করতে হবে। নাগরিকদের টিকাদান, সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরা ইত্যাদি বিধি অনুসরণ করতে হবে।
অন্যদিকে ডব্লিউএইচওর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. তাকেশি কাসাই আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হল আমরা সঠিক সময়ে, সঠিক রোগীদের, সঠিক জায়গায়, সঠিকভাবে চিকিৎসা করছি তা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা, ওমিক্রনের ঝুঁকি ‘খুব বেশি’