যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত ও মেক্সিকোর পর বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে ব্রিটেনে ভাইরাস সংক্রান্ত মৃত্যু লাখ ছাড়াল। এই পাঁচ দেশের মধ্যে জনসংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে ছোট ব্রিটেন।
বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চার লাখের অধিক কোভিড-১৯ মৃত্যু ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তবে এ দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৩৩ কোটি যা ব্রিটেনের পাঁচগুণ।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়াল
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর দেশটিতে এক লাখ ১৬২ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার নতুন এক হাজার ৬৩১ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই নির্মম পরিসংখ্যান যে দুঃখ ধারণ করে আছে তা গণনা করা দুরূহ।’
করোনায় যুক্তরাজ্যে মোট মারা যাওয়ার এ সংখ্যাটি ১৯৪০-৪১ সময়ে সেখানে জার্মানির বোমা হামলায় নিহতদের সংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি এবং দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের ছয় বছরে যত বেসামরিক ব্রিটিশ মারা গিয়েছিলেন তার চেয়ে ৩০ হাজার বেশি।
আরও পড়ুন: কোভিড টিকা কি মিলিয়ে মিশিয়ে ব্যবহার করা যাবে?
ভারতে দ্বিতীয় ধাপে ভ্যাকসিন নেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি
ভাইরাসে প্রথম নিশ্চিতভাবে মারা যাওয়া ব্রিটিশ ব্যক্তি ছিলেন পিটার অ্যাটউড। অবসরপ্রাপ্ত ৮৪ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন এবং তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ রেকর্ড করা হয় কয়েক মাস পর।
তারপর, এক বছর ধরে লাখ লাখ ব্রিটেনবাসীকে প্রিয়জন হারানোর শোক সহ্য করতে হচ্ছে। বিপর্যয়কর এ পরিস্থিতির জন্য দায়ীদের জবাবদিহির দাবিও জানিয়ে আসছেন তারা।
জনগণের মাঝে স্থুলতা ও হৃদরোগের উচ্চ হার, ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যকার বিপুল ব্যবধান এবং বৈশ্বিক যোগাযোগের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে লন্ডনের অবস্থানের মতো বিভিন্ন কারণে ব্রিটেন ভাইরাসটিতে অধিক পরিমাণে আক্রান্ত হয়েছে। সেই সাথে মহামারির সময় সরকারি সিদ্ধান্তও অবস্থা খারাপ করতে অবদান রেখেছে।
আরও পড়ুন: করোনার কারণে ২০০৮ সালের চেয়েও মন্দাবস্থায় চাকরির বাজার
সংক্রমণ তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধির সময় মার্চে লকডাউন আরোপ করতে বেশি দেরি করায় অনেক বিজ্ঞানী বরিস জনসনের কনজারভেটিভ সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন। শীর্ষ মহামারিবিদরা বলছেন যে এক সপ্তাহ আগে পদক্ষেপ নেয়া হলে হয়ত মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা যেত।
ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এপ্রিলে এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকা বরিস জনসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে ব্রিটেনের মহামারি সামাল দিতে নেয়া কার্যক্রম তদন্ত করে দেখা হবে। তবে এটি কখন শুরু হবে তা তিনি জানাননি।
আরও পড়ুন: এখনই করোনার টিকা নিতে আগ্রহী দেশের ৩২ ভাগ মানুষ: গবেষণা
যুক্তরাজ্যে ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার ২৮ দিনের মধ্যে যারা মারা গেছেন তাদেরই কোভিড-১৯ সংক্রান্ত মৃত্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে, মহামারি শুরুর সময়ে অনেক ঘটনা বাদ পড়ে যাওয়ায় এ সংখ্যাটি স্বাভাবিকভাবেই বেশি হবে। যুক্তরাজ্যের পরিসংখ্যান বিভাগ বলছে, এক লাখ আট হাজারের বেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে মৃত্যুর সনদে কোভিড-১৯ উল্লেখ করা হয়েছে।