আগামীকালের অপেক্ষায় অনেকে। আর পছন্দ হোক আর নাই হোক বেশিরভাগ মানুষ চায় পরীমণি জামিন পাক। এখন আর তার অপরাধ বিষয় নয়। তার রিমান্ড, হাজতবাস ইত্যাদি মিলিয়ে এমন এক আবহ সৃষ্টি হয়েছে যে পাবলিকের চোখে সে এক ধরণের ভুক্তভোগী। তারা মনে করে যে তার ওপর 'অন্যায়’ করা হচ্ছে। মানুষের মন এমনই। পাবলিক কারও কষ্ট দেখলে বিশেষ করে পুলিশের হাতে সিম্প্যাথেটিক হয়ে যায়।
২. এর সাথে আছে আরও বিভিন্ন অপরাধ ও গ্রেপ্তার নিয়ে পাবলিকের ভাবনা। বড় বড় আসামি জেলের ভেতর থাকে আরামে, বিরাট বাটপার সহজেই দেশ ছাড়ে আর প্রতিদিনিই কেউ না কেউ মাফ বা অব্যাহতি পেয়ে যায় ওই অপরাধের অভিযোগ থেকে।
সময়টাও খারাপ, কারণ ইদানিং ‘বিশাল’ কয়েকজনকে ছাড় দেয়া হয়েছে। পাবলিক তাই বলছে, তাদের অপরাধের তুলনায় পরীমণি কি করেছে? এতো কেন? কিন্তু যেহেতু পাবলিকের কোনো ক্ষমতা বা প্রভাব নেই, তাই সে মনে মনে ‘জামিন’ দিয়ে দিয়েছে। আর কি করার আছে তাদের?
৩. বোট ক্লাবের ঘটনা থেকেই সব সূত্রপাত। যাদের সে ‘ক্ষতি’ করেছে , যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তারা ব্যক্তিগতভাবে নয় গোষ্ঠীগতভাবে আঘাত পেয়েছে, অপমান বোধ করেছে। তাই রাগটা অনেক বড়, পাল্টা আঘাত আরও বড়। পুলিশ এরই মধ্যে ইঙ্গিত করেছে যে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগের ভিত্তি নেই, অতএব ঝালটা আরও বেশি তো হবেই। তার দাম চুকাতে হচ্ছে পরীমণিকে।
৪. পরিমণির জীবন-যাপন বাংলাদেশের বড়লোকদের ওপরতলার মানুষের মতোই, যেখানে নেশা, ‘অনৈতিক আচরণ’, ক্লাব আর রিসোর্ট কেন্দ্রিক জীবন বহমান। কিন্তু পরীমণি মিডল ক্লাস বড়োজোর, তার রুজি বা জীবন চলে বড়লোকের সাথে মেলা মেশায়, হিসাবের ভুল এখানে। সে উপরতলার নয়। একসাথে মদ খেলে সব মদ খোর এক হয় না, সবার সাথে লাগা যায় না। যার যে শ্রেণি সেটাই ঠিকানা। হেলেনা জাহাঙ্গীর তার ভালো উদাহরণ। পরীমিণির বিরুদ্ধে লেগেও, বোট ক্লাবের সদস্য হয়েও সে একই ধরণের মামলায় জেলেই। কারণ সে উপরতলার নয়।
৫. পাবলিক এতো কিছু বোঝে না, পরীমণির জন্য তাদের মধ্যে ‘আহা বেচারি’ বোধ কাজ করছে সবচেয়ে বেশি। সে কি হয়েছিল ভুলে গেছে, এখন রিমান্ড আর জেল দেখে দুঃখিত। তাই কি আর করবে, মনের জামিনটা দিয়েছে আদালতের জন্য অপেক্ষা না করে। তারা এইটুকুই পারে।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
আরও পড়ুন: পরীমণির জামিন শুনানির তারিখ এগিয়েছে
পরীমণির জামিন শুনানি দ্রুত করার বিষয়ে হাইকোর্টের রুল