বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, দেশের মেগা প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘তরল গ্যাসে গরল হিসাব (এলএনজিতে অসামঞ্জস্য) আজ (রবিবার) একটি সংবাদপত্রের শিরোনাম। প্রতিবেদনটি পড়লে অবাক হয়ে যাবেন, কীভাবে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে মহেশখালীর ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে ১১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা চলে গেছে।’
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা ভাসানীর ‘মাও সেতুং এর দেশ’ শিরোনামের পুনঃমুদ্রিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন সবক্ষেত্রে লুণ্ঠন ও শোষণ ছাড়া কিছুই নেই।’
ফখরুল বলেন, ‘আপনি যদি এই সমস্ত (মেগা) প্রকল্প তদন্ত করেন, তবে আপনি দেখতে পাবেন হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। দেশে এখন এমনই ভয়ানক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘দেশের বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে মুক্তির পথ খুঁজে বের করতে হবে। প্রথমে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি উদার গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা নির্বাচনে বিশ্বাস করি। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে।’
আরও পড়ুন: গুম, নিপীড়ন বন্ধে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘ড. আকবর আলী খান বিএনপির রাজনীতি করেন না। তিনি গতকাল (শনিবার) বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এটা শুধু তার মতামত নয়, অনেকেই এমনটি মনে করেন।’
ফখরুল বলেন, হারানো অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বর্তমান শাসনের পতন নিশ্চিত করতে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলতে এখন ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে বাংলাদেশের মানুষ এখন চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মানুষ এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়।’
আওয়ামী লীগ কেন দেশ ও দলে মওলানা ভাসানীর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেয় না বলে প্রশ্ন তোলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। কিন্তু তারা (আ.লীগ নেতারা) তাকে একবারের জন্যও চিনতে পারছে না।’
মওলানা ভাসানী তার সমগ্র জীবন বাংলাদেশের দরিদ্র, অসহায় ও মেহনতি মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করেছেন উল্লেখ করে তিনি মহান জাতীয় নেতার অবদানকে স্মরণ করার জন্য একটি মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, ‘স্কুলের শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে একজন ছাড়া অন্য কারো নাম নেই। এর মানে এই যে দেশের স্বাধীনতা, সংগ্রাম এবং মানুষের জীবন পরিবর্তনে একজন ব্যক্তি ছাড়া কারও অবদান নেই।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ‘বিদেশিদের’ পরামর্শের ওপর নির্ভর করছে না: খন্দকার মোশাররফ