নিহতদের মধ্যে দুজন হলেন- গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গীর আরিচপুরের চাঁন মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া এবং কুমিল্লার সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের বাগবের গ্রামের হারু মিয়ার ছেলে রাসেল। দুজনকেই মাদক ব্যবসায়ী দাবি করেছে র্যাব ও পুলিশ। অন্যদিকে চট্টগ্রামে নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানাতে না পারলেও তাকে সন্ত্রাসী দাবি করছে র্যাব।
ইউএনবি জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে উপজেলার ভুজপুর থানার কোঠবাড়িয়া গ্রামস্ত্র শিকদার পাড়া এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মাশকুর রহমানের ভাষ্য, বুধবার দিবাগত গভীর রাতে ভুজপুর থানার কোঠবাড়িয়া গ্রামস্ত্র শিকদার পাড়া এলাকায় র্যাবের একটি টহল দলের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এসময় র্যাব পাল্টা গুলি করলে দুপক্ষের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হঠে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
র্যাব স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম পরিচয় না পাওয়া গেলেও নিহত ব্যক্তিকে সন্ত্রাসী দাবি করছে র্যাব।
র্যাবের ওই কর্মকর্তার দাবি, ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীদের ফেলে যাওয়া একটি একে-২২ রাইফেল এবং ৬৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব সদস্যরা।
এদিকে গাজীপুরের সালনায় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সুজন মিয়া নামে এক যুবক নিহতের কথা জানিয়েছে র্যাব।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গীর আরিচপুরের চাঁন মিয়ার ছেলে সুজন মিয়াকে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে র্যাব।
র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামানের ভাষ্য, সিটি করপোরেশনের সালনা এলাকায় কয়েকজন অস্ত্র ব্যবসায়ী জড়ো হয়ে অস্ত্র কেনাবেচা করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে সেখানে অভিযান চালায়। এসময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। র্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে সুজন মিয়া গুলিবিদ্ধ হন এবং অপর সহযোগীরা পালিয়ে যান।
ওই কর্মকর্তার দাবি, গোলাগুলিতে র্যাবের সৈনিক কামরুল ইসলাম আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ সুজন মিয়াকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে দুটি শর্টগান, ২টি ওয়ান শ্যুটার, ৯ রাউন্ড কার্তুজ ও ১২ শ’ পিস ইয়াবা বড়ি উদ্ধারের কথাও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, নিহত সুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১১টি মাদক, একটি অস্ত্র ও অপরটি হত্যা মামলা।
অন্যদিকে কুমিল্লায় সদর উপজেলা গোমতী নদীর বেড়ী বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বুধবার দিবাগত রাতে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ রাসেল নামে এক ব্যক্তি নিহতের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের বাগবের গ্রামের হারু মিয়ার ছেলে রাসেলকে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় ১০টি মামলা রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. মাঈন উদ্দিনের ভাষ্য, শ্রীপুর এলাকায় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী মাদক ভাগাভাগি করছে এমন খবর পেয়ে রাত দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে।
ওই কর্মকর্তার দাবি, এক পর্যায়ে ‘মাদক ব্যবসায়ী’ রাসেল গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও দাবি করেন, ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া ঘটনস্থল থেকে একটি পাইপ গান, একটি রামদা ও সাড়ে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।