জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি পোষাতে প্রতিশ্রুত অর্থায়নে উন্নত দেশসমূহের গড়িমসি কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে তাদের স্বচ্ছতা, সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শুধু সামর্থ্যের অভাবই নয়, তহবিল দাতারও অভাব রয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলার সক্ষমতা রয়েছে এবং কার্যকর অভিযোজন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সরকার তার সক্ষমতা দেখিয়েছে। কিন্তু জলবায়ু অর্থের অর্ধেক সবচেয়ে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিতে অভিযোজনে দেয়া উচিত। কিন্তু তাও দিচ্ছে না তারা।
বুধবার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ২৬ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এক সাইড ইভেন্টে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সংকট এখনই মোকাবিলা করতে হবে: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
হাছান মাহমুদ বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে নানা বাহানায়, দীর্ঘসূত্রিতায় বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর বড় প্রমাণ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ইননোসেন্ট ভিক্টিম। এ জন্য আমাদের দায় একেবারেই নগণ্য।
তিনি বলেন, শিল্প উন্নত ও ধনী দেশসমূহ এ জন্য দায়ী হলেও তারা এর দায় নিচ্ছেনা। বরং দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাই বলে, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির কাছে অসহায় ভাবে আত্মসমর্পণ করেনি। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সময় উপযোগী পদক্ষেপের কারণে নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যা ইতোমধ্যে বিশ্ব সমাদৃত ও রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ, উদ্যোগ, বিজ্ঞানীও গবেষকদের গবেষণায় জলবায়ু সহিঞ্চু বিভিন্ন জাতের ধান উৎপাদন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। বিশেষ করে খরাসহিঞ্চু, বন্যাসহিঞ্চু, জলমগ্নসহিঞ্চু, বনসহিঞ্চু জাতের ধান উৎপাদন করছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে উন্নত বিশ্বের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহকে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তার পাশাপশি প্রযুক্তি সহায়তা দেয়া। একই সাথে তা প্রতিশ্রুতি, আশ্বাস, আর কথামালার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে কার্যকর ও দৃশ্যমান করা।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘ব্যর্থ’: গ্রেটা থুনবার্গ
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের এনডিসি প্রতিশ্রুতি কেবল কার্বন নি:সরণ কমাতেই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং গুণমান উন্নত করবে। জীবনের জন্য আমাদের বিনিয়োগ, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ক্লাইমেট চেঞ্জ সংক্রান্ত সংসদীয় দলের প্রতিনিধি ও সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় বলেন, বাংলাদেশের জন্য অভিযোজন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু প্রকল্পগুলি দেশীয় ও ঐতিহ্যগত জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় সম্প্রদায়ের পরামর্শ এবং অংশগ্রহণের মাধ্যমে তৈরি করা উচিত। আমাদের এটাকে স্বচ্ছ, যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত করতে হবে। এটি স্থানীয়ভাবে নেতৃত্বে ও বটম আপ অ্যাপ্রোচ হতে হবে।
আরও পড়ুন: শক্তিশালী রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে জলবায়ু কর্মকাণ্ড কার্যকর হচ্ছে না: প্রধানমন্ত্রী
ব্রিটিশ কাউন্সিলের টিম লিডার জেরি ফক্স বলেছেন, স্থানীয় অভিযোজন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভবিষ্যতের চাবিকাঠি হবে। বাংলাদেশে আমরা একটি ক্লাইমেট ফাইন্যান্স ইকোসিস্টেম তৈরি করছি যা স্থানীয়, জাতীয় এবং বিশ্বব্যাপী কাজ করা প্রধান সংস্থাগুলিকে একত্রিত করে, সম্প্রদায়ের প্রয়োজনে সাড়া দেয় এমন অভিযোজন সমাধানগুলিকে শক্তিশালী করার জন্য একটি সদগুণ বৃত্ত তৈরি করে। এবং বৈশ্বিক তহবিলকে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় এমআরভি প্রদান করে।
পানি ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত এই ইভেন্টে সভাপতিত্ব করেন।