করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রথম ডোজ দেয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজ কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরপরও স্বাভাবিক টিকা কর্মসূচি চলমান থাকবে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীস্থ বিসিপিএস ভবনে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য একদিনে এক কোটি ডোজ টিকা প্রদান কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। সবাইকে আহ্বান করবো টিকা নেয়ার। সবাইকেই টিকা দিবো। এরপর থেকে দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজের কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকবো। তবে সাময়িকভাবে প্রথম ডোজে একটু দৃষ্টিপাত কম থাকলেও কার্যক্রম চলমান থাকবে।
আরও পড়ুন: ২৬ ফেব্রুয়ারি এক কোটি টিকা দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমরা বিশেষ এই টিকা কর্মসূচিতে এক কোটি ডোজ টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রয়োজনে দেড় কোটি ডোজ দিব। দশ কোটি ডোজ টিকা আমাদের হাতে রয়েছে। আমরা এর আগেও ৮০ লাখেরও বেশি টিকা দিয়েছি। আমাদের সক্ষমতা রয়েছে। বিশেষ এই কর্মসূচির বিষয়ে অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বাস, ট্রাক, দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি। সকলের সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই সফল হবো।
টিকায় রাশিয়া-তুরস্কের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমে রাশিয়া-তুরস্কের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্লুমবার্গ প্রশংসা করে আমাদের জানিয়েছে বিশ্বের ২০০টি দেশের মধ্যে ভ্যাকসিনেশনে বাংলাদেশ ১০ম অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা সাড়ে ১৮ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছি। সেখানে জার্মানিতে ১৭ কোটি টিকা দেয়া হয়েছে, রাশিয়ায় ১৬ কোটি টিকা দেয়া হয়েছে, তুরস্ক ১৪ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছে, থাইল্যান্ড ১২ কোটি ডোজ টিকা দিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র তিন কোটি ডোজ দিয়েছে। সেদিক থেকে আমরা টিকায় অনেক এগিয়ে আছি।
তিনি বলেন, সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৮ লাখ টিকা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে মোট সাড়ে ১৮ কোটি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের টার্গেট করা মানুষের শতকরা ৮৬ ভাগ প্রথম ডোজ, ৬৫ ভাগকে দ্বিতীয় ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে ৩২ লাখ মানুষকে বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে। আমরা স্কুলের বাচ্চাদের দেড় কোটি ডোজ টিকা দিয়েছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ে আমরা গত দুই বছর কাজ করছি এবং সফলতার সঙ্গে মহামারি মোকাবিলা করেছি। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন এবং প্রশংসা করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থসহ অনেক আন্তর্জাতিক সংগঠন ও বিশ্ব নেতার আমাদের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের প্রশংসা করেছে৷
আরও পড়ুন: করোনার মধ্যেও দেশের রেমিট্যান্স খাত ঊর্ধ্বগতিতে আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এ সময় ২৬ ফেব্রুয়ারি টিকা কর্মসূচির পরিকল্পনা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, আমরা ওইদিন একদিনেই এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। এ লক্ষ্যে আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওয়ার্ড কমিটি, জেলা ও সিটি কমিটির সঙ্গে সঙ্গে কথা বলেছি। সকলের সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, শ্রমিক কর্মচারীরা যখন স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে টিকা নিবে, সেটি তার কর্মঘন্টার মধ্যেই যুক্ত হবে। এ নিয়ে আমরা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, অধ্যাপক ডা. আহমদুল কবির, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হকসহ আরও অনেকে।