বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১১ হাজার ৬৯১ জন এবং নারী ৪৬ হাজার ৭৬০ জন।
এছাড়া গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৭৬৯ জন, যাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪২৬ জন এবং নারী ৯১ হাজার ৩৪৩ জন।
করোনাভাইরাস দূর করতে ভ্যাকসিন নিতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এর আগে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ সারা দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হচ্ছে। টিকাদানের প্রথম দিন মোট ৩১ হাজার ১৬০ জনকে টিকা দেয়া হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রবিবার বিকালে টিকাদান সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৭০ লাখ ডোজ রয়েছে এবং করোনার টিকা নিতে চাইলে www.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
টিকাদান ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
ভারতের উপহার হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। এরপর ২৫ জানুয়ারি সেরাম থেকে বাংলাদেশের ক্রয় করা কোভিশিল্ডের প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ নিরাপদে ঢাকায় আসে।
গত ২৭ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষামূলক টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়।
কী পরিমাণ টিকা দেয়া হবে
গত ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর (টাঙ্গাইল-৬) এক প্রশ্নের জবাবে অগ্রাধিকারী ভিত্তিতে কাদের কী পরিমাণ কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হবে তা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৪০ বছরের বেশি সবাইকে টিকাদানের নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভ্যাক্স সুবিধা থেকে বাংলাদেশ তার জনসংখ্যার ৩ কোটি ৪০ লাখ লোকের বা ২০ শতাংশের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকা পাবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা গ্রুপের (এসএজিই) নির্দেশিকা এবং দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে টিকা গ্রহণকারী অগ্রাধিকার গোষ্ঠীগুলোর তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রথম পর্যায়ে টিকা বিতরণে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের মোট ১ কোটি ৫০ লাখ লোক (জনসংখ্যার ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ) দুই ডোজ টিকা পাবেন।
কুষ্টিয়ায় নার্সের বদলে করোনার টিকা দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান!
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই টিকাগুলো দেশের ৬৪ জেলা ইপিআই স্টোর এবং ৪৮৩টি ইপিআই স্টোরে সংরক্ষণ করা হবে।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি
মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ১০ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ হাজার ২৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে বলে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ৬ হাজার ২৪৩ জন পুরুষ এবং এক হাজার ৯৯৬ জন নারী রয়েছেন।
এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮৮ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৩৯ হাজার ১৫৩ জনে পৌঁছেছে।
করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২.৫৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
টিকা নিলেন জাফরুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীকেও নেয়ার আহ্বান
এতে আরও বলা হয়, এ সময়ে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট ২০৬টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৫ হাজার ৪০২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ১৪ হাজার ৯৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সর্বমোট ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ২৪১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৭১৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ২৯০ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমকি ০১ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।