তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি করোনা টিকা নিয়েও কিছু ভুল, অসত্য সংবাদ আমাদের দেশে এবং ভারতেরও কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশিত হয়েছে, যা দু’দেশের মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির উপক্রম করেছে, পরে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সংবাদ সম্মেলনে তা নিরসন হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মেগা ইভেন্টের মাধ্যমে ২০২১ সালে সম্পর্ক শক্তিশালী করবে বাংলাদেশ-ভারত
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ইমক্যাব) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত শুধু আমাদের সহায়তাই করেনি, আমাদের মুক্তিকামী মানুষের সাথে ভারতের সেনাবাহিনী যুদ্ধ করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সাথে ভারতের সেনাবাহিনীর সদস্যদের রক্তও মিশে আছে এবং বাংলাদেশের এক কোটি মানুষকে ভারত আশ্রয় দিয়েছিল। পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে অনেক পরিবার তাদের ঘরের একটি বা দুটি কক্ষ শরণার্থীদের জন্য ছেড়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, ভারতের মানুষের এই অবদান, ভারতের অবদান, ভারতের সেনাবাহিনীর আত্মদান বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
আরও পড়ুন: দিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্র সচিব বৈঠক শুক্রবার
বঙ্গবন্ধু এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু কারাগারে ছিলেন। তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী শুধুমাত্র বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য নয়, বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুকে যাতে ফাঁসি দেয়া না হয়, সেজন্য এক দেশ থেকে আরেক দেশে এমন করে ৩০টি দেশ সফর করেছেন। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা লাভ করেছিল। এ অবদান কখনো ভুলার নয়।
আরও পড়ুন: ‘স্বাধীনতা সড়ক’ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে: মন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে আরও গভীরে প্রোথিত হয়েছে। আমাদের দু’দেশের মধ্যে যে আন্তসংযোগ সেটি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি মনে করি এটি এখনও যথেষ্ট নয়। আমাদের দু’দেশের মানুষের মধ্যে আন্তসংযোগ, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়ানো প্রয়োজন।’
‘এটিকে ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে যে পর্যায়ে ছিল আমাদেরকে ধীরে ধীরে সেই পর্যায়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। তাহলে দু’দেশের মানুষ উপকৃত হবে, দুই দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে ‘ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত অংশীদারিত্ব: পানিবণ্টন নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চায় দিল্লি
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিশ্বে প্রতিবেশি সম্পর্কের দিক দিয়ে একটা উদাহরণ হবে বলে আশাপ্রকাশ করে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই দুদেশের সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে উঠেছে। দু’দেশের ক্ষেত্রে যা করতে হবে তা বঙ্গবন্ধু আগেই দেখিয়ে গেছেন, আমাদের নতুন করে কোন পথপ্রদর্শন দরকার নেই। দু’দেশের আশা আকাঙ্খা এক, কোন পার্থক্য নেই। জনগণ পর্যায়ে সম্পর্ক যেন বাড়ে আমাদের সেদিকে নজর দিতে হবে, তাহলে সম্পর্ক স্থায়ী হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ: সঞ্জিব ভাট্টি
যা আমাদের জন্য ভালো তা আপনাদের জন্য ভালো, আবার যা আপনাদের জন্য ভালো তা আমাদের জন্য ভালো, এই নীতিতে এগিয়ে যেতে হবে, সন্দেহের কোন জায়গা নেই, আমাদের অনেক পথ যেতে হবে, এক্ষেত্রে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা ব্যক্ত করেন দোরাইস্বামী।
ইমক্যাব সভাপতি বাসুদেব ধরের সভাপতিত্বে সিনিয়র সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।