বুধবার তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীন সাহায্য করবে। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত মানুষদের দ্রুত, নিরাপদ ও মর্যাদার সাথে ফেরার মাঝে রয়েছে এ সংকটের সমাধান, যারা নিজেদের ভূমি রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। আমি আশা করি তাদের ফিরিয়ে নিতে চীন মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানো অব্যাহত রাখবে।’
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন।
আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ কোনো ধরনের সংঘাতে বিশ্বাস করে না। তারা শান্তিপূর্ণভাবে এ বিষয়টি সমাধান করতে চায়।
নতুন চীনা দূতকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক চমৎকার এবং তা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
চীনকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, কারিগরি ও আর্থিক খাতে দেশটির সমর্থন এখানে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সহযোগিতার এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
‘চীনের আর্থিক ও কারাগরি সহযোগিতায় অনেক মেগা প্রকল্প বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যা বৃহত্তরভাবে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখছে,’ বলেন তিনি।
বৈঠকে চীন সরকারকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান আবদুল হামিদ।
‘এক চীন’ নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ নীতিকে সমর্থনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবিচল রয়েছে।
এ সময় লি জিমিং বলেন, চীনের বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে ভালো গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করেন এবং অনেক চীনা কোম্পানি ইতিমধ্যে এখানে বিনিয়োগ করেছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য তার দেশ সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। সেই সাথে তিনি এখানে দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে, বাংলাদেশে কসভোর প্রথম আবাসিক রাষ্ট্রদূত গোনিয়ার উরেয়া বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। তাকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ঢাকায় আবাসিক মিশন খোলার সিদ্ধান্তের জন্য কসভো সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
‘এর মাধ্যমে দুদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শুরু হলো এবং তা আগামী দিনগুলোতে বহুপক্ষীয় সম্পর্কে রূপ নেবে,’ বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি পরামর্শ দেন যে নতুন দূতকে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে অধিকতর সক্রিয় হতে হবে।
কসভোর জনগণের সাথে বাংলাদেশের সংহতির গভীর প্রকাশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কসভোকে স্বাধীন দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।
গোনিয়ার উরেয়া কসভোকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুই রাষ্ট্রদূত বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি চৌকস অশ্বারোহী দল তাদের গার্ড অব অনার দেয়।