বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, তাদের দল (বিএনপি) নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের খসড়া আইন নিয়ে কম চিন্তিত, কারণ তাদের মূল মনোযোগ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের প্রতি। তিনি বলেন, আমাদের দাবি একটি (নির্বাচনকালীন) নিরপেক্ষ সরকারের জন্য, নির্বাচন কমিশনের জন্য নয়।
বুধবার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনকালে গয়েশ্বর চন্দ্র এ মন্তব্য করেন।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩টি আসন জিতেছিল।
সুতরাং নির্বাচন কমিশন বা এ বিষয়ে আইনের খসড়া নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের অভিযোগ প্রত্যাখান বিএনপির
তিনি বলেন, খসড়া আইনে একটি বড় শর্ত হলো- গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বা আধা-সরকারি অফিসে বা বিচার বিভাগে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা না থাকলে কেউ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সদস্য হতে পারবেন না। এর মানে সরকারি কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কাউকে কমিশনে নিয়োগ দেয়া হবে না। আর সরকারি কর্মকর্তারা তো শেখ হাসিনার কর্মচারী।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, এমনকি সুশীল সমাজের সদস্য, শিক্ষাবিদ ও আইনজ্ঞরাও ইসির সদস্য হতে পারবেন না।
তিনি বলেন, সার্চ কমিটি আইনসম্মত ছিল না, কিন্তু আইন পাস হলেই তা আইনের আওতায় চলে আসবে। এর মানে অবৈধ জিনিস আইনের মাধ্যমে বৈধ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার মন্ত্রিসভায় ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’-এর খসড়ায় সংবিধান অনুযায়ী আইন করার অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে’
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে এবং সার্চ কমিটি সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে উপযুক্ত প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে এবং নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) অন্য কোনো বিকল্প নেই। এখন আপনার ক্ষমতা ছাড়ার সময়ের ব্যাপার।
মেডিকেল ক্যাম্প থেকে চিকিৎসকরা ১৮০ জন দরিদ্র রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্র এক মাস আগে বাকি থাকায় নতুন ইসি গঠনে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।