তিন দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে মারা গেলেন সিলেটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরায় ট্রেনের ধাক্কায় আহত আরেকজন মাইক্রোবাস যাত্রী। নিহতের নাম কামাল আহমেদ (৩৫) দুর্ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে মারা যাওয়া আফিফের বাবা। সিলেট নগরের লোহারপাড়া কাজী জালাল উদ্দিন আবাসিক এলাকার ১২৩/১ বাসার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় মোট ৩ জন মারা গেলেন।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিলেট নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন কামাল আহমেদের প্রতিবেশী রিজভী আহমেদ।
এদিকে, এ ট্রেন দুর্ঘটনায় কামাল আহমেদের বড় ভাই লাবিব গুরুতর আহত অবস্থায় নগরীর আল-হারামাইন হসপিটালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: রেললাইনে পিকআপ, বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল সোনার বাংলা ট্রেন
এছাড়া আরও চারজন আহত অবস্থায় নগরীর আল-হারামাইন হসপিটাল ও জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন- লিলি বেগম (৪০), রাবু বেগম (২০), রিজু (২০) ও জাহানারা বেগম (৫৪)।
এর আগে গত রবিবার সামাজিক একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দু’টি মাইক্রোবাসে করে সিলেট শহর থেকে কুলাউড়ার ভাটেরায় যাচ্ছিলেন নগরীর লোহারপাড়া কাজী জালাল উদ্দিন আবাসিক এলাকার একটি পরিবার। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুলাউড়ার ভাটেরা এলাকার হোসেনপুর গ্রামে প্রবশের সময় একটি গাড়ি রেলক্রসিং অতিক্রম করে। অন্যগাড়ি ৯ জন যাত্রী নিয়ে রেললাইন অতিক্রম করতে গেলে স্থানীয়রা বাঁধা দেন।
আরও পড়ুন: কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট
রাস্তা সরু ও মাইক্রোবাস চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় রাস্তা দিয়ে প্রবেশ না করতে মাইক্রোবাসের ড্রাইভারকে আপত্তি জানান স্থানীয় বেশ কয়েকজন শ্রমিক। কিন্তু ড্রাইভার এদের আপত্তি তোয়াক্কা না করে রেল লাইনে উঠে পড়ে।
মাইক্রোবাসের দু’টি চাকা অতিক্রম করলেও পেছনের দুটি চাকা অতিক্রম করতে সময় নিচ্ছিল গাড়িটি। অবস্থা বেগতিক দেখে গাড়ি থেকে নেমে সড়ে যান ড্রাইভার। এর কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সিলেটগামী আন্ত:নগর পারাবত ট্রেন এসে আটকাপড়া মাইক্রেবাসে প্রচণ্ড শক্তিতে ধাক্কা দেয়। দ্রুতগামী ট্রেনটি প্রায় আধা কিলোমিটার টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসটিকে।
আরও পড়ুন: ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য ১০ জনের রক্ষা
এতে ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ফরিদ উদ্দিন (৪৮) ও তার ভাইয়ের ছেলে আফিফ (৮) মারা যান। আহত হন ছয়জন। হতাহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠান। পরে তারা নগরীর প্রাইভেট দু’টি হাসাপাতালে ভর্তি হন।