স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনার টিকা নিয়েছেন এক লাখ ৯৪ হাজার ৩৭১ জন। যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৭ হাজার ৪৩ জন এবং নারী ৬৭ হাজার ৩৭১ জন।
এদিকে, রাজধানীর সচিবালয় ক্লিনিক, বিএএফ বাশার ও বিএএফ বঙ্গবন্ধুতে টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বাকি ৪৩টি টিকাদান কেন্দ্রে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২৬ হাজার ৫৬৪ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, গত এক সপ্তাহে মোট ৪৬টি কেন্দ্রে ৯৫ হাজার ৪৬৫ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ৮৫৭ জন পুরুষ এবং ৩০ হাজার ৬০৮ জন নারী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: টিকা প্রদানে প্রবীণদের অন-স্পট রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি বিবেচনাধীন: স্বাস্থ্য সচিব
করোনার টিকা প্রদানে কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন সুবিধা বাতিল: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এর আগে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ সারা দেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হচ্ছে। টিকাদানের প্রথম দিন মোট ৩১ হাজার ১৬০ জনকে টিকা দেয়া হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রবিবার বিকালে টিকাদান সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৭০ লাখ ডোজ রয়েছে এবং করোনার টিকা নিতে চাইলে www.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
ভারতের উপহার হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। এরপর ২৫ জানুয়ারি সেরাম থেকে বাংলাদেশের ক্রয় করা কোভিশিল্ডের প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ নিরাপদে ঢাকায় আসে।
আরও পড়ুন: যাদু বা ম্যাজিক দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ হয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের এক ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগের সুপারিশ ফ্রান্সের
করোনাভাইরাস দূর করতে ভ্যাকসিন নিতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
গত ২৭ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষামূলক টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়।
দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত কমলেও মৃত্যু বেড়েছে
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার আরও কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে ২.২৬ শতাংশ। তবে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শনিবার জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮ হাজার ২৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার আগের ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যুর কথা জানায় অধিদপ্তর।
পাশাপাশি, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯১ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৪০ হাজার ২৬৬ জনে পৌঁছেছে।
করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২১০টি পরীক্ষাগারে ১২ হাজার ৩৯৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৮৭১টি নমুনা।
আরও পড়ুন: করোনা: মালয়েশিয়ায় সবার আগে ভ্যাকসিন নেবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী
দক্ষিণ আফ্রিকায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন প্রয়োগ স্থগিত
মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ০৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩৭৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৭৬৭ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ১০ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।