শরিয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:হাইকোর্টের জামিন জালিয়াতির ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ ১৬ জন কারাগারে
নির্দোষ দাবি করে মানিক হাওলাদারের মুক্তির জন্য তার স্ত্রী সালমা বেগমের করা এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।
তদন্তে প্রকৃত আসামি কে তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। এই তদন্তে সিরাজগঞ্জের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এবং জেল সুপারকে সহযোগিতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ১২ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেছে আদালত। রুলে মানিক হাওলাদারকে গ্রেপ্তার ও তাকে কারাগারে আটক রাখা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আদালতে নির্দোষ দাবীকারী মানিক হাওলাদারের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট পার্থ সারথী রায়। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আরও পড়ুন:বিয়ে ও বিবাহ বিচ্ছেদ ডিজিটালাইজেশনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
অ্যাডভোকেট পার্থ সারথী রায় জানান, একটি গাড়িতে ৬৬৮ বোতল ফেনসিডিল রাখার অভিযোগে ২০০৯ সালের ২ জুন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলার আসামি মো. মানিক মিয়া, পিতা অজ্ঞাত-কে ২০০৯ সালের ৩ জুন গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই বছরই হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান মানিক। হাইকোর্টে দাখিল করা জামিন আবেদনে আসামি তার ঠিকানা হিসেবে পিতা নজরুল ইসলাম, মা রেজিয়া বেগম, গ্রাম আলম চাঁন ব্যাপারী কান্দী, ইউনিয়ন সখিপুর, ওয়ার্ড নম্বর-৯ দেখানো হয়। হাইকোর্টে ভুল ঠিকানা দিয়ে জামিন নিয়ে পালিয়ে যায় আসামি।
আরও পড়ুন:সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে টাকা পাচারকারীদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট
আইনজীবী আরও জানান, এ মামলায় বিচার শেষে মানিক মিয়াসহ চারজনকে ৪ বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ আদালত রায় দেয়। আদালতের নথিতে মানিকের পিতার নাম নজরুল ইসলাম উল্লেখ রয়েছে। এই রায়ের পর শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলম চাঁন ব্যাপারী কান্দী গ্রামের নজরুল ইসলাম ও রেজিয়া বেগমের ছেলে মাছ ব্যবসায়ী মানিক হাওলাদারকে গত বছর ২৮ নভেম্বর ভেদরগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এর পরই মানিক মিয়ার প্রতারনার বিষয়টি সামনে আসে।
জানা যায়, প্রকৃত আসামি মানিক মিয়ার পিতার নাম ইব্রাহিম মৃধা, মায়ের নাম লুতফা বেগম। গ্রাম মালতকান্দি। থানা ও ইউনিয়ন সখিপুর, উপজেলা ভেদরগঞ্জ, জেলা শরিয়তপুর।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, উভয় মানিকের বাড়িই শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার শখিপুর ইউনিয়নে। তবে গ্রাম ও পিতা-মাতার নাম আলাদা।
এ অবস্থায় মানিক হাওলাদারের মুক্তি ও তাকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ২ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করেন তার স্ত্রী। এই আবেদনের সাথে দুই মানিকের পরিচয় তুলে ধরে সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মানিক সরদারের দেয়া একটি সনদ দাখিল করা হয়। তাতে প্রকৃত আসামির পিতার নাম ইব্রাহিম মৃধা ও নির্দোষ মানিকের পিতার নাম নজরুল ইসলাম উল্লেখ করা হয়েছে।