১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো নির্মম গণহত্যা নিয়ে ‘দখল দেশে: গণহত্যা ও ৭১’ শিরোনামের চার পর্বের আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে ইউএনবিতে। এর আগে ১৬ ডিসেম্বর সম্প্রচারিত হয়েছে এই সিরিজের প্রথম পর্ব ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পরাজয়’। আজ বৃহস্পতিবার এই সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ‘গণহত্যা ও ৭১’ সম্প্রচার হয়েছে ইউএনবি প্লাটফর্মে।
চার পর্বের এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করছেন ইউএনবি’র এডিটর এট লার্জ আফসান চৌধুরী। তিনি একজন শিক্ষক, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাংবাদিক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন আফসান চৌধুরী।
‘দখল দেশে’ সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ‘গণহত্যা ও ৭১’ এ অতিথি হিসেবে থাকবেন গণহত্যা বিষয়ক গবেষক মো.এনামুল হক। তিনি বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের চারটি জেলা –রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোরে সংঘটিত ১১১টি গণহত্যা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছেন এবং এই গবেষণালব্ধ ফলাফল তাঁর রচিত চারটি বইতে তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন: ৭১-এ নারীর ভূমিকা নিয়ে ইউএনবিতে পডকাস্ট
গবেষণা করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন কর্মক্ষম ব্যক্তি। তাদের মৃত্যুর পর স্বজন হারানোর বেদনার পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহ করাটা তাদের পরিজনদের জন্য আরেকটি যুদ্ধের মতো ছিল।
তিনি আরও দেখেছেন, যেখানেই গণহত্যা হয়েছে সেখানেই ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনও হয়েছে।
মো.এনামুল হক বলেছেন, রাজাকারদের কারণে গণহত্যা বেশি হয়েছে। তাদের ব্যক্তিগত রেষারেষি,রাগ,ক্ষোভের কারণেও অনেক গণহত্যা হয়েছে। গণহত্যা হানাদারেরা করলেও রাজাকাররা ছিল গণহত্যার মূল ইন্ধনদাতা।
তিনি বলেছেন, পাকিস্তানি হানাদারদের প্রধান টার্গেট ছিল এদেশের হিন্দুরা। তাই যেখানে হিন্দু পেয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতা বা কর্মী পেয়েছে; তাদের কাউকে ছাড়েনি।
সবশেষে মুক্তিযুদ্ধ মানুষের মনে কেমন প্রভাব ফেলেছিল সঞ্চালকের এই প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মানুষের মনে আতঙ্ক ও ভয় তৈরি করে। মানুষ একটা রাতও শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। বিজয়ের পর মানুষ আস্তে আস্তে এই দুর্বিষহ স্মৃতি ভুলতে থাকে।
আরও পড়ুন: ইউএনবি এবং ঢাকা কুরিয়ারে এডিটর এট লার্জ হিসেবে যোগ দিলেন আফসান চৌধুরী
বাংলাদেশে গণহত্যার ‘স্বীকৃতি’ আদায়ে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান