পৃথিবীর কোনও দেশই স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেইনি, অবহেলা করেছি। যার ফলাফল আমরা করোনায় পেয়েছি। করোনা মহামারিতে আমরা কতোটা অসহায়, সেটা দেখেছি। শুধু আমরাই নই, পৃথিবীর কোন দেশই স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়নি।’
বৃহস্পতিবার বিএসএমএমইউ তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
জাহিদ মালেক বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণ সম্পর্কে আমরা সচেতন না হলে সামনে আবারও করোনার তৃতীয় ঢেউ চলে এলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে দেখা দিতে পারে। করোনার প্রথম ঢেউ বাংলাদেশ যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামলে নিলেও, স্বাস্থ্যখাতে অবহেলার ফল আমরা পেয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যখন করোনায় মৃত্যু ৩-৪ জনে নেমেছিল তখন মানুষ ভেবেছিল করোনা দেশ থেকে চলে গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষ অনিহা দেখাচ্ছিল। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ভ্রমণ করেছে। অধিক হারে সামাজিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এসব কারণেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। দিনে প্রায় শত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা শিগগিরই কেটে যাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা আমাদেরকে দেখিয়েছে স্বাস্থ্যসেবার যদি বিপর্যয় ঘটে তাহলে মানুষের কি অবস্থা হয়। দেশের সব উন্নয়ন থেমে যায়, দেশে শান্তি থাকে না, সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি হয়।
মন্ত্রী বলেন, আমরা শুরুতে খুব ভালোভাবেই টিকা কার্যক্রম শুরু করেছিলাম, কিন্তু মাঝপথে ভারত টিকা বন্ধ করে দেয়ায় আমাদের থেমে যেতে হয়েছে। আপনারা জানেন আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি, তবুও বিকল্প হিসেবে আমরা রাশিয়ার টিকা অনুমোদন দিয়েছি যেন আমাদের সেই টিকা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে পারি।
‘এছাড়াও কেউ যদি দেশে টিকা বানাতে চায়, সে সুযোগ আমরা দিচ্ছি। আমরা বলেছি, যে কেউ টিকা বানালে আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। আমাদের দেশে কয়েকটি ফ্যাক্টরি রয়েছে, যেখানে তারা টিকা তৈরি করতে পারে। আমরা চাই তারা টিকা বানিয়ে আমাদের দেশের মানুষকেও দিক এবং দেশের বাইরেও রপ্তানি করুক,’ বলেন তিনি।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আরও পড়ুন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ২১ লাখ টিকা আসছে
এছাড়াও অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেকমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম. ইকবাল আর্সলান, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ উপস্থিত ছিলেন।