বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘৃণা বা বিদ্বেষমূলক পোস্টের (কনটেন্ট) প্রচার-প্রকাশ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রিট আবেদন করা হয়েছে। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী তাপস কান্তি বল এই রিটটি দাখিল করেন।
সাংবাদিক সেলিম সামাদ,ড. মাসুম বিল্লাল,অ্যাডভোকেট জর্জ চৌধুরী ও সমাজ সেবক ভিক্টর রায় বাদী হয়ে এই রিট করেন।
রিটে বিটিআরসির চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক এবং ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। রিটে কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই দেশে ফেসবুকের অপব্যবহার ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
রিট দায়েরের পর আইনজীবী তাপস কান্তি বল জানান, গত নভেম্বর মাসে বিটিআরসি ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সিকে একটি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলাম। তাতে ফেসবুকসহ অন্যান্য যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে উস্কানিমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ ও কুরূচিপূর্ণ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ছে তাদেরকে; বিশেষ করে ফেসবুককে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে যে জবাব এসেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নয়। এ কারণে একটি রিট দায়ের করেছি। রিট আবেদনটি সুপ্রিমকোর্টের অবকাশ শেষে আগামী জানুয়ারিতে শুনানির উদ্যোগ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে রিট
এর আগে গত নভেম্বরে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ১৩ অক্টোবর হিন্দুদের মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখা হয়েছে বলে এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়। সেটি ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশের ২৭ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগেও রামু, নাছিরনগর, শাল্লা, বোরহানউদ্দিন, পাটগ্রাম, দেবহাটায় ফেসবুকের এমন ব্যবহারের এ ধরনের ঘটনা ঘটে। ফেসবুকে এ ধরনের ঘৃণিত পোস্ট বন্ধে বা নিয়ন্ত্রণে বিবাদীরা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়,‘ডিজিটাল নিরপত্তা আইন অনুযায়ী ভুয়া, অসত্য তথ্য ছড়ানো বন্ধ করা ১ থেকে ৪ নম্বর বিবাদীর দায়িত্ব। কিন্তু এ দায়িত্ব পালনে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন।’
এতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অসত্য তথ্য ছড়িয়ে দেশের জনগণের জান-মালের যে ক্ষতি হয়েছে সে সময় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের গাইড লাইন, আন্তর্জাতিক আইন ও দেশীয় আইন পালনে ব্যর্থ হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী ফেসবুকে এসব অসত্য তথ্য প্রচার বন্ধে বিবাদীরা ব্যর্থ হয়েছেন।
পরে আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন,‘ফেসবুক ব্যবহার করে ঘৃণা বা বিদ্বেষমূলক (হেট স্পিচ) পোস্ট ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। হেট স্পিচের মাধ্যমে ছড়ানো সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর। সেই দায়িত্ব প্রতিপালনে তারা ব্যার্থ হয়েছে। তাই এই লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। যেখানে সরকারের কাছে ১৪টি সুপারিশ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মুরাদের এমপি পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট
চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু: ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট