মার্কিন সৈন্যদের আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়া এবং তালেবানদের আফগান দখলের ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছিল কম-বেশি দুই শ’ মার্কিন নাগরিক আফগানিস্তানে আটকে পড়েছেন। কিন্তু মার্কিন পুনর্বাসন এবং উদ্ধারকারী সংগঠনগুলো বলছে, বাইডেন প্রশাসনের এমন দাবি ভিত্তিহীন।
তাদের মতে, প্রশাসন শুধুমাত্র কাবুলের মার্কিন দূতাবাসে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার জন্য তালিকাভুক্তদের কথা উল্লেখ করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার জন্য দূতাবাসে রেজিস্ট্রেশন না করতে পারা, আমেরিকার গ্রিন কার্ড বা স্থায়ী বসবাসের অনুমতি প্রাপ্ত এবং মার্কিন নাগরিকদের পরিবারের সদস্যদের কথা তাদের হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়াগোর কাজন ভ্যালি স্কুলের মুখপাত্র হাওয়ার্ড শ্যান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হলেও, গ্রিন কার্ড প্রাপ্ত মানুষেরা বহু বছর ধরে আমেরিকায়া বসবাস করছে, তারা কর দিচ্ছে, আমাদের কমিউনিটির অংশ উঠেছে। তাদের অনেকের সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তাদের ব্যাপারে কেউ কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: কাবুল ছাড়ল শেষ মার্কিন বিমান, দীর্ঘতম যুদ্ধের সমাপ্তি
আমেরিকার বিভিন্ন স্কুলে অধ্যয়নরত অনেক শিক্ষার্থী তাদের পরিবারসহ আফগানিস্তানে আটকে পড়েছে। তারা আফগানিস্তান ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, আটকে পড়া এক শ’ থেকে দুই শ’ মার্কিন নাগরিককে ফিরিয়ে আনতে উদ্ধার কাজ অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে যারা দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে আফগানিস্তানের অবস্থান করছে এবং তালেবানদের হাত থেকে মুক্ত হতে চায়। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডধারী আফগান নাগরিক এবং বিগত ২০ বছরে যেসকল আফগান কর্মকর্তারা মার্কিন প্রশাসনকে সমর্থন দিয়েছেন তাদেরকে’ও উদ্ধার কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।
কিন্তু এই আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাবাহিনী উপস্থিতি ছাড়া এই উদ্ধার কাজ কিভাবে সম্পন্ন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, বর্তমানে আফগানিস্তন থেকে বের হবার একমাত্র পথ কাবুল বিমান বন্দর তালেবানদের দখলে রয়েছে।
আরও পড়ুন: আইএসকে লক্ষ্য করে আফগানিস্তানে মার্কিন ড্রোন হামলা
আফগানিস্তানে আটকে পড়াদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য দরিস মাতসুই। তিনি কয়েকটি পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করলেও, তালেবানদের বাঁধার কারণে এবং ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় তারা ফিরে আসতে পারেনি।
ডিজিটাল ডানক্রিকসহ উদ্ধারকারী সংগঠনগুলো বলছে, আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়া শুধু মার্কিন নাগরিকের সংখ্যাই পাঁচ শতাধিক। আর মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা ব্যক্তিদের আফগান পরিবারের সদস্যদের যুক্ত করলে, এই এক হাজারে কাছাকাছি চলে যাবে।