গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় আরও অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল শিশু।
শনিবার ভোরে গাজা উপত্যকায় হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষে এটাই ইসরায়েলের অধিক প্রাণহানী হওয়া হামলা ছিল।
আরও পড়ুন: আল-আকসায় সংঘর্ষে ২০০ ফিলিস্তিনি আহত
সাম্প্রতিক সহিংসতা জেরুজালেম থেকে শুরু হয়ে ইসরায়েলে অভ্যন্তরের বিভিন্ন শহরে আরব ও ইহুদিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে। এছাড়া পশ্চিম তীরে শুক্রবার ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি করে অন্তত ১১ জনকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
বর্তমান ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এমন এক সময়ে নতুন করে ফিলিস্তিনি গণআন্দোলনে রূপ নিতে যাচ্ছে, যেখানে গত কয়েক বছরে কোনও শান্তি আলোচনা হয়নি।
আরও পড়ুন: হামাসকে কঠোর হুশিয়ারি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর
এদিকে শনিবার ফিলিস্তিনিরা ‘নাকবা দিবস’ পালন করার কথা ছিল। ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ১৯৪৮ সালের ১৫ মে এর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের কাছে নাকবা এক মহাবিপর্যয়ের দিন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইহুদি অভিবাসীরা ওই দিন ফিলিস্তিনিদের বাড়ি ও ভূমি দখল করে নেয়। ওইদিন বাস্তাহারা সাত লাখ ফিলিস্তিনি। এরই মধ্যে বর্তমান এই সহিংসতা নতুন করে যুদ্ধ রূপ নিতে পারে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের এক বাড়ির নাম ‘শেখ হাসিনা’
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক হ্যাডি আমর ইসরায়েলে শান্তি আলোচনা জন্য এসে পৌঁছায়। রবিবার জাতিসংঘের নিরপত্তা পরিষদের সভা হবার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার মিশরের এক বছরের জন্য যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব হামাস মেনে নিলেও, তা ফিরিয়ে দেয় ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র সহিংসতায় ক্লান্ত গাজাবাসীর ঈদে নেই আনন্দ
ফিলিস্তিনি বসতি দখল ও হামলার প্রতিবাদে গত সোমবার রাতে হামাসের কয়েকশ রকেট হামলা পর থেকে শুরু হওয়া দুই পক্ষের সহিংসতায় এই পর্যন্ত ৩১ শিশু এবং ২০ জন নারীসহ অন্তত ১২৬ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক মারা গেছে। এদিকে ইসরায়েলে এক শিশুসহ ৭ জন মারা যায়।
শনিবার ভোর পর্যন্ত দুই পক্ষের হামরা, পাল্ট হামলা অব্যাহত ছিল। কিন্তু গাজা উপত্যকার একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ৮ শিশু ও ২ জন নারী নিহত হয়। এটাই একদিনে এক হামলায় সর্বোচ্চ মৃত্যু।
আরও পড়ুন: গাজায় স্থল হামলা চালানোর হুমকি ইসরায়েলের
পবিত্র লাইলাতুল কদর ও পবিত্র ঈদের দিনেও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার আবারও ফিলিস্তিনিদের চরম মূল্য দিতে হবে বলে জানান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘আত্মরক্ষার’ নামে ইসরায়েলকেই সমর্থন জানিয়েছেন।
তবে যতদিন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসন চলবে, ততদিন পর্যন্ত পাল্টা জবাব দেয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা এ পর্যন্ত ২ হাজারেরও অধিক রকেট হামলা চালিয়ে ইসরায়েলকে চাপে রেখেছে।