নারী এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে ৯ উইকেটে পরাজিত হওয়ার পর বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটকে ঘিরে যে ধরনের উচ্ছ্বসিত প্রচারণা ছিল তা অনেকটাই ম্লান হয়েছে। পাকিস্তান খেলেছে জায়গা মতো আর বাংলাদেশ পড়েছে বেকায়দায়।
বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ড ও থাইল্যান্ডকে পরাজিত করে এই কাপে এবং তাদের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের কাপ জয়ের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের প্রত্যাশা করেছিল সবার। কিন্তু পুরাই ব্যর্থ হয়েছে। সত্যিকার অর্থে পাকিস্তান একটি শক্তিশালী দল। কিন্তু কাপের ডিফেন্ডার হিসেবে বাংলাদেশে কাছ থেকে অনেক ভালো করার প্রত্যাশা ছিল। তা হয়নি।
যেমন ক্রিকেট সাইট ক্রিকবাজ তাদের লাইভ ধারাভাষ্যে অকপটে বলেছে, ‘বাংলাদেশের ব্যাটিং ও বোলিংয়ের অবস্থা ভয়ঙ্কর বাজে ছিল’। অর্জনের পর বাজে খেলা, স্পষ্টতই একটি ব্যাধি- যা আমরা ভালো ভাবেই জানি যখন বাংলাদেশের ক্রিকেটের কথা আসে।
আরও পড়ুন: হিরো আলম: আসল ঝামেলাটা কি গান না শ্রেণি?
জঘন্য ব্যাটিং
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে ৭০ রান করে। সালমা খাতুন সর্বোচ্চ ২৪ রান করেন এবং মাত্র অন্য দুইজন খেলোয়াড় দুই অঙ্কে পৌঁছেতে পারেন। আমাদের ‘ভয়ঙ্কর’ ব্যাটিং সম্পর্কে ভালো জানান দেয়। যারা ম্যাচটি দেখেছেন তারা প্রায় সবাই বলেছেন একটি কথা। খেলাটা জেতার ইচ্ছাটা অভাব ছিল যেন। হয় তারা ম্যাচটিকে হালকাভাবে নিয়েছে বা কীভাবে এটিকে সিরিয়াসলি নিতে হবে তা জানে না।
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা যথারীতি অজুহাত দিলেও সেগুলো অন্তঃসারশূন্য শোনায়। ‘টপ অর্ডার ভেঙে পড়েছে এবং উইকেট স্লো হওয়ায় আমরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। আমরা ভেবেছিলাম এটা ব্যাটিং করার জন্য ভালো পিচ। কিন্তু পিচটি ছিল স্যাঁতসেঁতে। বোলাররা সঠিক জায়গায় বল করতে পারেনি। আমি মনে করি আমাদের কিছু বিষয়ে কাজ করতে হবে এবং আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে হবে।’
অবশ্যই পিচটি স্যাঁতসেঁতে ছিল, এটি ক্রিকেট জীবনের অংশ। কিন্তু কীভাবে একজন আঠালো পিচে ব্যাট করেন তা বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ার অংশ। দুর্ভাগ্যবশত, এই ম্যাচে বাংলাদেশ সেই প্রবণতা বা অভিপ্রায় দেখিয়েছে বলে মনে হয় না।
আরও পড়ুন: ভারতে এতো ঝামেলা হচ্ছে কেন?
পাকিস্তান ছিল বিধ্বংসী
পাকিস্তান একই পিচে খেলেছে এবং তাদের স্পিনাররা খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটার দের মাথা নত করিয়ে দেয়। তারা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিল যে আমাদের মেয়েদের অযোগ্য দেখায়। পাকিস্তান যখন ব্যাট করতে শুরু করে তখন উইকেটের কিছুটা উন্নতি হয়েছিল কিন্তু দলটি স্পষ্টতই আরও আত্মবিশ্বাসী এবং জয়ের অভিপ্রায় নিয়ে খেলে এবং মাত্র ১২ ওভারে তা করেছিল। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশ কখনোই চ্যাম্পিয়নদের মতো দেখতে মনে হয়নি।
পাকিস্তান দলের পারফরম্যান্স নিয়ে এমনটাই বলেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ। ‘বোলারদের কাছ থেকে খুবই ক্লিনিক্যাল সাফল্য পেয়েছি। প্রথম দিকের উইকেট হারাবার পর তাদের চাপে ফেলে দেয় আমাদের বোলাররা I আমরা আমাদের স্পিন নিয়ে কাজ করছি। আমরা আমাদের পরিকল্পনা ভালোভাবে বাস্তবায়ন করেছি। তারা একটি ভাল টিম। আমাদের বিরোধী দলকে সম্মান দিতে হবে। তবে আমাদের আজকের পারফরম্যান্স ভালো ছিল।’ এটি এমন একটি দলের কাছ থেকে একটি অত্যন্ত নম্র প্রতিক্রিয়া ছিল যারা মূলত ‘চূর্ণ’- বিডি মিডিয়ার পরাজয় বর্ণনা করার জন্য প্রিয় শব্দ - করেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের এবং টেবিলের শীর্ষে চলে গেছে।
বিসিবি প্রধান পাপন তাদের জিততে দেখে এবং তাদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করার পর দলটি কুফা লেগেছে বলে যে গুজব চলছে, সেটা গুজব , সত্য নয় তা আমরা তা নিশ্চিত করতে পারি।
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিরোধী দলের বন্ধ্যাত্ব