জেলায় লক্কড়-ঝক্কর মাইক্রোবাসগুলোকে সামান্য পরিবর্তন করে বানানো হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স। আর গাড়িগুলোতে রোগী বহনের জন্য দক্ষ চালকের প্রয়োজন হলেও অনেক ক্ষেত্রে সহকারী দিয়েই চালানো হচ্ছে এগুলো। এসব অ্যাম্বুলেন্সের চালকরা মানছেন না সড়কের কোনো নিয়ম। অনেকের নেই কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স। সহকারী হিসেবে কাজ করতে করতে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন তা দিয়েই অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছেন। রাস্তায় প্রশাসনের হাতে পড়লে সামান্য জরিমানা দিয়েই রেহাই পেয়ে যান তারা।
আরও পড়ুন:খুলনার বাজারে নতুন পেঁয়াজ, মজুদ নিয়ে চিন্তিত টিসিবি
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে সব মিলিয়ে প্রায়ই অর্ধশতাধিক অ্যাম্বুলেন্সের দেখা মেলে। সেখানে কিছু কিছু পুরাতন মাক্রোবাসের ওপরে শুধুমাত্র লাল আলো লাগিয়ে ও অ্যাম্বুলেন্সের স্টিকার মেরে ব্যবহার করা হচ্ছে রোগী বহনের কাজে।
এ রকম এক অ্যাম্বুলেন্সের চালক বলেন, ‘ভালো অ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহনে ভাড়া লাগে বেশি। গরিব মানুষ তেমন অ্যাম্বুলেন্স নিতে পারেন না, তাদের জন্য একটু কম ভাড়ায় এসব অ্যাম্বুলেন্স। এছাড়া যাদের বহন করার জন্য অক্সিজেনের দরকার হয় তাদের এসব অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হয় না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালক বলেন, খুলনায় অনেক ফিটনেসবিহীন অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। যাদের অ্যাম্বুলেন্সই বলা যায় না এবং তারা অ্যাম্বুলেন্স সমিতির আওতাভুক্তও নয়। আবার শহরের বাইরে থেকেও অনেক অ্যাম্বুলেন্স এসে বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে রোগী নেয়ার জন্য বসে থাকে। অনেক চালক লাইসেন্সে না থাকার কথাও স্বীকার করেন।
আরও পড়ুন:খুলনায় নিষিদ্ধ সংগঠন ‘আল্লার দলের’ ৮ সদস্য আটক
খুলনা অ্যাম্বুলেন্স চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাছুদুর রহমান বাগা বলেন, ‘খুলনায় ড্রাইভিং লাইসেন্সহীন চালকের কথা অস্বীকার করা যাবে না। নতুন নতুন অনেকে গাড়ি চালাচ্ছেন যাদের লাইসেন্স নেই। কিন্তু পুরাতন চালক যারা আছেন, তাদের বেশির ভাগেরই লাইসেন্স আছে।’
তিনি বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমাদের সংগঠনের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কেউ অ্যাম্বুলেন্স চালাতে পারবেন না। আর কেউ যদি এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
খুলনা অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এইচএম ওলি বলেন, ‘নগরীতে আমাদের সমিতির আওতাভুক্ত প্রায় ৩০-৩৫টি অ্যাম্বুলেন্স আছে। সমিতির আওতাধীন প্রতিটি গাড়িরই লাইসেন্স রয়েছে।’
সমিতির বাইরে যেসব অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করছে তাদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানা নেই বলে জানান সমিতির এ শীর্ষ নেতা।
আরও পড়ুন:লাইসেন্স নেই, খুলনার ২৬টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) খুলনার সহকারী পরিচালক মো. আবুল বাশার বলেন, অ্যাম্বুলেন্স রোগী বহনের কাজে ব্যবহার করা হয় বলে পুলিশও তল্লাশি করে না। এ সুযোগ নিয়ে অনেকে গাড়ি চালিয়ে থাকে। তবে বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে প্রায় দিনই অভিযান চালানোর পাশাপাশি জরিমানাও করা হচ্ছে। যদি কেউ রোগী বহনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছাড়া কোনো গাড়ি অ্যাম্বুলেন্স নামে চালায় তাহলে তা আইন বহির্ভূত।
লাইসেন্স ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স চালানো অপরাধীসহ ফিটনেসবিহীন অ্যাম্বুলেন্স ধরতে আরও কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান আবুল বাশার।