সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী এবং বিজিবি সদস্যদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়ে পার হতে হচ্ছে। আর সেতুটি দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষজন।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ও খলিল মিয়া জানান, ফুলবাড়ী ইউনিয়নের নাখারজান সীমান্তের নীলকমল নদের ওপর কাঠের সেতুটি তৈরি করা হয়েছে। সেতুটির পাশেই আন্তর্জাতিক ৯৪০ নম্বর মেইন পিলার রয়েছে। আর ৩ নম্বর সাব পিলারের ৫০ গজ অদূরের এ সেতুটি দিয়েই মানুষ চলাচল করছেন।
কলসের মতো ভূ-খণ্ড নাখারজান গ্রামটির তিন দিকে রয়েছে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। দক্ষিণে নীলকমল নদ। প্রায়ই বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা এখানে টহল দিতে আসেন। ভাঙনের কারণে নদটি কখনও ভারতে আবার কখনও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদটি আকারে ছোট হলেও বর্ষা মৌসুমে পানিতে পূর্ণ থাকে। প্রচুর স্রোত হয় তখন। ওই সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু ও বৃদ্ধদের কাঠের সেতুটি পাড়ি দিতে হয়। এতে করে অনেকবার দুর্ঘটনাও ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ভূরুঙ্গামারীতে ভেঙে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে ধলাই খালে সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
আরও পড়ুন: একটি সেতুর জন্য ৪৯ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন গ্রামবাসী!
তারা জানান, ১৯৮৭ সালে তৎকালীন ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান অধ্যক্ষ শাহাদত হোসেন নদের ওপর কাঠের একটি সেতু তৈরি করেন। এটি ২০০১ সালের পর পারাপারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এলাকাবাসী মিলে ১৫ বছর পর অর্থাৎ ২০১৬ সালে পুনরায় আরেকটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেন।
গ্রামবাসী বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের সেতু দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অনেক দিন থেকে তারা স্থায়ীভাবে একটি কংক্রিটের সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসেন। প্রশাসন সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নিলে তাদের দুর্ভোগ শেষ হতো। তাছাড়া ভারতীয় প্রশাসন অনেক সেতু দ্রুত নির্মাণ করে দিয়েছে সীমান্ত এলাকায়। তারা কেন পাচ্ছে না এ প্রশ্ন গ্রামবাসীর।
আরও পড়ুন: তাহিরপুরে সেতু ভেঙে পারাপারে ভোগান্তি
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের ১২ দিনের মাথায় ধসে পড়া সেতু পুনর্নির্মিত হলো না ৩৩ বছরেও
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ-হারুন বলেন, ‘নীলকমল নদীর ওপর পুনরায় একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। লোকজনও চলাচল করছেন। তবে অনেকবার কংক্রিটের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় বিএসএফের বাধার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।’
উপজেলা প্রকৌশলী আসিব ইকবাল রাজিব বলেন, ‘নাখারজানে নদের ওপর সেতু নির্মাণের প্রয়োজন। তবে সীমান্তে এ সেতু নির্মাণ দুদেশের উচ্চ পর্যায়ের বিষয়। সেতু নির্মাণের অনুমতি পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’