বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঙ্গলবার বলেছেন, এই মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ এবং দিন মজুরদের, তবে এই ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে করোনা মহামারির শিকার জনগোষ্ঠীর জন্য যে বরাদ্দ সুবিধা দেয়া হচ্ছে তা সরকার পক্ষের লোকজন ভোগ করে নিচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা বারবার বলছি সরকারের উচিত করোনাকালীন সময়ে বিশেষ করে যারা দিনে আনে দিনে খায় এবং ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে কাজ করে তাদের সাহায্য করা। আমাদের দরিদ্র ভাই বোনেরা করোনার এই প্রকোপে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো প্রণোদনার ঘোষণা দেয়া হয়নি৷’
আরও পড়ুন: বিএনপিকে ক্ষমা চেয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
তিনি বলেন, তাদের দলের পক্ষ থেকে সরকারকে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তিনমাসে এককালীন ১৫ হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়ার কথা বলা হলেও সরকার সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাদের জন্য যে সুবিধা ঘোষণা করা হচ্ছে তা সরকারি এবং আওয়ামী লীগ নেতারা ভোগ করছে।
বিএনপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ৪২তম প্রতিষ্টাবার্ষিকী এবং মে দিবস উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দরিদ্র, দিনমজুর এবং শ্রমিকদের ভোগান্তি কমাতে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে লকডাউন বাড়ানোয় সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকার দেশকে ‘নরকে’ পরিণত করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, দিনমজুর, দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি কমাতে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে সরকার এই লকডাউন জারি করেছে। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য লকডাউনের নামে এই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘লকডাউনের সুবিধ নিয়ে সরকার বিভিন্ন ধর্মীয় এবং ছাত্রসংগঠনের নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। সরকারের বিরুদ্ধে যার কথা বলছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, পুরো জাতি এখন তাদের হাতে জিম্মি।’
জনগণের আনুকূল্যে সরকার প্রতিষ্ঠা এবং মৌলিক অধিকার রক্ষার আন্দোলনে শ্রমিক এবং ছাত্রসমাজকে একত্রিত হয়ে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: হেফাজত নেতাদের মুক্তির দাবি জানাল বিএনপি
খালেদার অবস্থা
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে সোমবার খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে (করোনা কেয়ার ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তিনি এখনো সিসিইউতে আছেন এবং তাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
ফখরুল বলেন, খালেদ জিয়া দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন চিকিৎসকরা। তার দ্রুত সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভের ফল আসে। তিনি ছাড়াও তার বাসার আট সদস্য করোনায় আক্রান্ত। ২৪ এপ্রিল খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফা করোনা পরীক্ষাতেও ফলাফল পজিটিভ আসে।