সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে খেলা শুরুর পর থেকে প্রায় ৭৮ হাজার রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকের যে বিশাল গর্জনে বুক কেঁপে কেঁপে উঠছিল বার্সেলোনার তরুণ খেলোয়াড়দের, দ্বিতীয়ার্ধের কিছুক্ষণ পর থেকে সেই উল্লাস কোথায় যেন মিলিয়ে গেল, আর এক কোনায় থাকা মাত্র ৪০০ ব্লাউগ্রানা সমর্থকের চিৎকার ছাপিয়ে গেল গোটা গ্যালারির স্তব্ধতা। বার্সেলোনাকে আরও একবার হারিয়ে, কিংবা অন্তত হার এড়িয়ে বার্সারই টানা জয়ের রেকর্ড ভাঙার যে স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ভিনিসিউস-এমবাপ্পে-বেলিংহ্যামরা, ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই সেই স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে গেল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে লা লিগায় মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে রিয়ালের মাঠেই বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া বার্সেলোনা।
২০২২ সালের ২০ মার্চের পর ঘরের মাঠে এটিই রিয়ালের সবচেয়ে বড় হার। ওই ম্যাচটিও তারা হেরেছিল বার্সেলোনার কাছেই, একই ব্যবধানে।
এছাড়া সব মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ জেতার পর এদিন বার্সার কাছে হারল রিয়াল মাদ্রিদ। ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই সর্বশেষ রিয়ালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল শাভি এরনান্দেসের শিষ্যরা।
আরও পড়ুন: সেভিয়াকে বিধ্বস্ত করে এল ক্লাসিকোর প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
চলতি মৌসুমে ভালো শুরু না পেলেও নানাভাবে হার এড়িয়ে লা লিগায় টানা ৪২ ম্যাচ অপরাজিত ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সর্বশেষ ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্তভাবে ঘরে দাঁড়িয়ে ৫-২ গোলে জিতে দারুণভাবে এল ক্লাসিকোর প্রস্তুতিও সারে কার্লো আনচেলত্তির দল। তবে ক্লাসিকোতে বড় হারে সব প্রস্তুতি ধূলায় মিশে গেছে দলটির। অন্যদিকে, রিয়ালকে হারিয়ে নিজেদের রেকর্ড অক্ষত রেখেছে বার্সেলোনা।
এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে ভিনিসিউস-এমবাপ্পের মতো ক্ষিপ্র গতির খেলোয়াড়দের আটকানোর কৌশল বাতলে দিয়েছিলেন বার্সা বস ফ্লিক। সেই কৌশল অবলম্বন করেই রিয়ালের বিষদাঁত বের করতে দেননি এই জার্মান।
ম্যাচে শুধু এমবাপ্পেই ৮ বার বার্সার অফসাইডের ফাঁদে পড়েছেন। ফরাসি এই স্ট্রাইকারের নৈপুণ্যে ম্যাচের ৩০তম মিনিটে এগিয়েও গিয়েছিল রিয়াল, তবে অফসাইডে কাটা পড়ে তার গোলটি।
আরও পড়ুন: রিয়ালের অগ্নিঝরা ফুটবলে পুড়ে ছাই ডর্টমুন্ড
প্রথমার্ধে মাঠে তেমনভাবে প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে শুরু করে রিয়ালের খেলোয়াড়রা। তবে বলের দখল, গতি নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণ, কাউন্টার প্রেসিং ও ফিনিশিংয়ে তাদের চেয়ে পরিষ্কারভাবে এগিয়ে ছিল বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা; আর এর ফলও পেয়েছে তারা।